বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজানোর সময় প্রার্থীরা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন যার প্রধান কারণ কোন কোন বিষয় বিবেচনা করে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে হবে সেটি না জানা এবং বিভিন্ন ক্যাডার সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকা।
অথচ বিসিএস লিখিত পরীক্ষার একটি অংশ এবং ভাইভা পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন সবই নির্ভর করে প্রার্থী ক্যাডার চয়েসের উপর। আর তাই বিসিএস এর আবেদন ফরম পূরণের সময় কিভবে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে হবে সেটি জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে চলুন জেনে নেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডার পদের মধ্য থেকে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করে সাজাবেন আপনার ক্যাডার চয়েস লিস্ট।
যেসব বিষয় বিবেচনা করে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাবেন:
১। আপনার ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দ বিবেচনা করে।
২। কর্মস্থল, কর্ম পরিবেশ এবং পদায়নের স্থান বিবেচনা করে।
৩। বৈধভাবে অতিরিক্ত ভাতা ও আর্থিক স্বচ্ছলতা বিষয় বিবেচনা করে।
৪। ক্যাডার পদটির দায়িত্ব এবং সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করে।
৫। ক্যাডার পদটির পদোন্নতি এবং পদসোপান এর কথা বিবেচনা করে।
৬। উক্ত ক্যাডার পদে নম্বর প্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচনা করে।
বিসিএস ক্যাডারের ধরণ:
বিসিএস এ সর্বমোট ২৬টি ক্যাডার পদ রয়েছে। যার মধ্যে ১৪টি ক্যাডার কে সাধারণ ক্যাডার এবং ১২টি ক্যাডার টেকনিক্যাল ক্যাডার বা প্রফেশনাল ক্যাডার বলা হয়ে থাকে। কোন প্রার্থী যদি একই সাথে এই দুই ধরনের ক্যাডারে আবেদন করে থাকেন তবে সেটিকে উভয় ক্যাডার পদে আবেদন বলা হয়ে থাকে।
১। সাধারণ ক্যাডার:
সাধারণ ক্যাডারের অধীনে থাকা ১৪টি ক্যাডার বিসিএস এর সকল ক্যাডার পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারন বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্য সকল প্রার্থীই এই ক্যাডারগুলতে আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীর নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী থাকার প্রয়োজন হয় না।
উল্লেখ্য যে, যদি কোন প্রার্থী সাধারণ ক্যাডার চয়েজ দিয়ে বিসিএস এর আবেদন ফরম পূরণ করেন তাহলে তাকে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
২। টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার:
স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে অধ্যয়ন করা প্রার্থীরা টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডারের অধীনে থাকা ১২টি ক্যাডারে আবেদন করতে পারেন। যেমন: সাধারণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রকৌশল।
উল্লেখ্য যে, যদি কোন প্রার্থী শুধু টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েজ করে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করেন তবে তাকে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ ক্যাডারের জন্য বরাদ্দকৃত লিখিত পরীক্ষার ৯০০ নম্বর থেকে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং বিজ্ঞানের ২০০ নম্বর বিয়োগ হবে এবং স্নাতক বা সমমানের পঠিত বিষয় থেকে ২০০ নম্বর যুক্ত হবে।
উভয় ক্যাডারে আবেদন করলে:
একজন প্রার্থী যদি উভয় ক্যাডারে আবেদন করেন তাহলে তাকে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এবং এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সাধারণ ক্যাডারের জন্য লিখিত পরীক্ষায় বরাদ্দকৃত ৯০০ নম্বর সহ নিজের স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে পঠিত বিষয়ে আরও ২০০ নম্বর, অর্থাৎ (৯০০+২০০) = ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
ক্যাডার কোড সহ বিসিএস ক্যাডার তালিকা:
ক্যাডারের নাম | ক্যাডারের ধরণ | ক্যাডার কোড |
এডমিন/ প্রশাসন ক্যাডার |
সাধারণ ক্যাডার | ১১০ |
আনসার ক্যাডার | ১১৮ |
অডিট ক্যাডার | ১১২ |
সমবায় ক্যাডার | ১১৯ |
শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার | ১১৩ |
পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার | ১২৪ |
খাদ্য ক্যাডার | ১১১ |
ফরেন / পররাষ্ট্র ক্যাডার | ১১৫ |
তথ্য ক্যাডার | ১২১ / ১২২ / ১২৩ |
পুলিশ ক্যাডার | ১১৭ |
ডাক ক্যাডার | ১১৬ |
রেলওয়ে পরিবহণ ক্যাডার | ১২৫ |
ট্যাক্স ক্যাডার | ১১৪ |
কৃষি ক্যাডার |
টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার
| ২২৬ / ২২৭ / ২২৯ |
মৎস্য ক্যাডার | ২৪০ |
বন ক্যাডার | ৫৫০ |
তথ্য ক্যাডার | ৫৩০ |
স্বাস্থ্য ক্যাডার | ৪১০ / ৪৫০ |
পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার | ৪১৫ |
পশু সম্পদ ক্যাডার | ২৭০ / ২৮১ |
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডার | ৩২০ |
গণপূর্ত ক্যাডার | ৩১১ / ৩১২ |
রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডার | ৩৫১ / ৩৫২ / ৩৫৩ / ৩৫৪ / ৩৫৫ |
সড়ক ও জনপদ ক্যাডার | ৩৩১ |
পরিসংখ্যান ক্যাডার | ৫৪০ |
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
কারিগরি শিক্ষা ক্যাডার | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
উভয় ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট:
আপনারা নিশ্চয়ই জেনে থাকবেন যে বিসিএস এ দুই ধরনের ক্যাডার রয়েছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে সাধারণ ক্যাডার এবং অন্যটি টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার। যদি একজন প্রার্থী এই দুই ধরনের ক্যাডার পদেই একত্রে আবেদন করেন তাহলে সেটি Both Cadre (উভয় ক্যাডার) বলে ধরা হয়।
আপনি যদি Both Cadre হিসেবে আবেদন করতে চান তাহলে নিচের ৩টি পদ্ধতি থেকে যেকোনো একটি পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
ক) ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে:
ইংরেজিতে স্পষ্টভাবে কথা বলার দক্ষতার দক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রার্থী পররাষ্ট্র ক্যাডার কে ১ম স্থানে রেখে অন্যথায় বাদ দিয়ে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে পরেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীর ক্যাডার চয়েস লিস্ট হবে নিম্নরূপ:
ক্রমিক | ক্যাডারের নাম | ক্যাডার কোড |
১ | পররাষ্ট্র | ১১৫ |
২ | প্রশাসন / পুলিশ | ১১০ / ১১৭ |
৩ | পুলিশ / প্রশাসন | ১১৭ / ১১৩ |
৪ | ট্যাক্স / কাস্টমস | ১১৪ / ১১৩ |
৫ | কাস্টমস / ট্যাক্স | ১১৩ / ১১৪ |
৬ | অডিট / আনসার | ১১২ / ১১৮ |
৭ | আনসার / অডিট | ১১৮ / ১১২ |
৮ | সমবায় / তথ্য | ১১৯ / ১২১ |
৯ | তথ্য / সমবায় | ১২১ / ১১৯ |
১০ | খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা | ১১১ / ১২৪ |
১১ | পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য | ১২৪ / ১১১ |
১২ | ডাক | ১১৬ |
১৪ | রেলওয়ে পরিবহণ | ১২৫ |
১৫ | সাধারণ শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
খ) প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার ২য় অবস্থানে রেখে:
যারা নিজে বিষয়ের অধীনে থাকা প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডার (যেমন: শিক্ষা ক্যাডার / স্বাস্থ্য ক্যাডার / প্রকৌশলী) ইত্যাদি ক্যাডার কে ২য় অবস্থানে রেখে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে চান তারা নিম্নোক্ত উপায়ে সেটি করতে পারেন।
ক্রমিক | ক্যাডারের নাম | ক্যাডার কোড |
১ | প্রশাসন / পুলিশ | ১১০ / ১১৭ |
২ | সাধারণ শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
৩ | ট্যাক্স / কাস্টমস | ১১৪ / ১১৩ |
৪ | কাস্টমস / ট্যাক্স | ১১৩ / ১১৪ |
৫ | অডিট / আনসার | ১১২ / ১১৮ |
৬ | আনসার / অডিট | ১১৮ / ১১২ |
৭ | সমবায় / তথ্য | ১১৯ / ১২১ |
৮ | তথ্য / সমবায় | ১২১ / ১১৯ |
৯ | খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা | ১১১ / ১২৪ |
১০ | পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য | ১২৪ / ১১১ |
১১ | ডাক | ১১৬ |
১২ | রেলওয়ে পরিবহণ | ১২৫ |
গ) টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার ১ম অবস্থানে রেখে:
যারা স্নাতক পর্যায়ে নিজের পঠিত বিষয়ের অধীনে থাকে টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডারকে প্রথম অবস্থানে রেখে ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে চান তারা নিম্নোক্ত উপায়ে সেটি করতে পারেন:
ক্রমিক | ক্যাডারের নাম | ক্যাডার কোড |
১ | সাধারণ শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
২ | প্রশাসন / পুলিশ | ১১০ / ১১৭ |
৩ | ট্যাক্স / কাস্টমস | ১১৪ / ১১৩ |
৪ | কাস্টমস / ট্যাক্স | ১১৩ / ১১৪ |
৫ | অডিট / আনসার | ১১২ / ১১৮ |
৬ | আনসার / অডিট | ১১৮ / ১১২ |
৭ | সমবায় / তথ্য | ১১৯ / ১২১ |
৮ | তথ্য / সমবায় | ১২১ / ১১৯ |
৯ | খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা | ১১১ / ১২৪ |
১০ | পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য | ১২৪ / ১১১ |
১১ | ডাক | ১১৬ |
১২ | রেলওয়ে পরিবহণ | ১২৫ |
শুধু ১টি (জেনারেল / টেকনিক্যাল) ক্যাডার চয়েজের ক্ষেত্রে বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট:
যেসকল প্রার্থী জেনারেল অথবা টেকনিক্যাল কেডারের যেকোনো একটি বিষয় বেছে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে চান তারা নিম্নোক্ত উপায়ে ক্যাডার চয়েস লিস্ট টি সাজাতে পারেন।
ক) শুধু জেনারেল ক্যাডার চয়েস লিস্ট:
যাদের স্নাতক বা সমমানের পর্যায়ে পঠিত বিষয়ে কোন প্রফেশনাল / টেকনিক্যাল ক্যাডার নেই তারা নিম্নোক্ত উপায়ে তাদের ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজাতে পারেন।
ক্রমিক | ক্যাডারের নাম | ক্যাডার কোড |
১ | পররাষ্ট্র (ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতার উপর নির্ভর করে) | ১১৫ |
২ | প্রশাসন / পুলিশ | ১১০ / ১১৭ |
৩ | পুলিশ / প্রশাসন | ১১৭ / ১১৩ |
৪ | ট্যাক্স / কাস্টমস | ১১৪ / ১১৩ |
৫ | কাস্টমস / ট্যাক্স | ১১৩ / ১১৪ |
৬ | অডিট / আনসার | ১১২ / ১১৮ |
৭ | আনসার / অডিট | ১১৮ / ১১২ |
৮ | সমবায় / তথ্য | ১১৯ / ১২১ |
৯ | তথ্য / সমবায় | ১২১ / ১১৯ |
১০ | খাদ্য / পরিবার পরিকল্পনা | ১১১ / ১২৪ |
১১ | পরিবার পরিকল্পনা / খাদ্য | ১২৪ / ১১১ |
১২ | ডাক | ১১৬ |
১৪ | রেলওয়ে পরিবহণ | ১২৫ |
১৫ | সাধারণ শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
খ) শুধু টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েস লিস্ট:
যেসকল প্রার্থী তার স্নাতক / সমমান পর্যায়ে অধ্যয়নকৃত বিষয়ের অধীনে থাকা টেকনিক্যাল / প্রফেশনাল ক্যাডার চয়েস করে আবেদন করতে চান তারা নিম্নোক্ত উপায়ে ক্যাডার চয়েস লিস্ট সাজতে পারেন।
ক্রমিক | ক্যাডারের নাম | ক্যাডার কোড |
১ | সাধারণ শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল | পদ সংশ্লিষ্ট কোড |
বিভিন্ন বিসিএস ক্যাডারের দায়িত্ব, সুযোগ - সুবিধা ও পদসোপান:
০১. বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার (Bcs Foreign Cadre): একটি মর্যাদাপূর্ণ সরকারি ক্যাডার। BCS প্রত্যাশীদের প্রায়শই প্রথম পছন্দ থাকে ‘পররাষ্ট্র ক্যাডার’। এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পদায়ন, পদোন্নতি, বদলিসহ পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তারা বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করে থাকে।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার যেহেতু বাংলাদেশের একটি প্রথম শ্রেণির পদ সেহেতু এই পদে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মকর্তারা নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান লাভ করে থাকে যা বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো-
পদসোপান সুবিধা: পররাষ্ট্র ক্যাডাররা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পদসোপান পায়। পররাষ্ট্র ক্যাডারের মূল পদসোপান হলো- সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > মহাপরিচালক > অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব > সচিব/পররাষ্ট্রসচিব (মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রযোজ্য)।
প্রশিক্ষণ সুবিধা: যোগদানের পর একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার কর্মকর্তা বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (বিপিএটিসি) ৬ মাস মেয়াদি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ ফাউন্ডেশন ট্রেনিং (এফটিসি) সম্পন্ন করেন। এরপর এই ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চাকরিকালীন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ১২ মাস মেয়াদি স্পেশালাইজড ডিপ্লোমেটিক ট্রেনিং কোর্স (এসডিটিসি)- সহ দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ লাভের সুযোগ পান।
আবাসন সুবিধা: পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরকারি কোয়ার্টারে আবাসন সুবিধা লাভ করে থাকে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য অফিস ও গাড়ির সুব্যবস্থা রয়েছে।
কূটনৈতিক পাসপোর্ট (রেড পাসপোর্ট) সুবিধা: পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ রাষ্ট্রের বিশিষ্টজনদের মতো কূটনৈতিক পাসপোর্ট (রেড পাসপোর্ট) পেয়ে থাকেন। এই ক্যাডারের কর্মকর্তারা পরিবারসহ কূটনৈতিক পাসপোর্টের পাশাপাশি ভিআইপি সুবিধা লাভ করে থাকেন।
মন্ত্রণালয়ে কাজের সুযোগ: অন্যান্য ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত কর্মকর্তারাদের সাধারণত অধিদপ্তরে কাজ করতে হয় কিন্ত পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা শুরুতেই মন্ত্রণালয়ে পদায়িত হয়।
অতিরিক্ত ভাতার সুবিধা: পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দূতাবাসে পদায়ন পেলে নিয়মিত বেতনের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১২০০ ডলার মাসিক ভাতা পেয়ে থাকেন।
স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ: পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপর রাজনৈতিক চাপ না থাকায় স্বাধীনভাবে নিজের কাজ পরিচালনা করার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের অসুবিধা:
পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সুযোগের পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধাও রযেছে। যা নিচে তুলে ধরা হলো-
যৌথ যাতায়াত ব্যবস্থা: পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ চাকরির শুরুতেই ব্যক্তিগত গাড়ি বা যাতায়াত সুবিধা পান না। তবে এ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ শুরুতেই যৌথ যাতায়াত সুবিধা পেয়ে থাকেন। যৌথ যাতায়াত ব্যবস্থা/ Shared Transport. তাই অনেকের ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যায় পরিণত হয়।
দাপ্তরিক কাজ: যদিও পররাষ্ট্র ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তবে প্রশিক্ষণমূলক কাজ হিসেবে টাইপিং থেকে শুরু করে সকল দাপ্তরিক কাজ করতে হয়।
অস্থায়ী কর্মজীবন: একজন পররাষ্ট্র ক্যাডার চাকরির প্রথম দুই বছর পর্যন্ত বা চাকরি স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত থাকেন। পরবর্তীতে আবার দুই বছরের জন্য দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পদায়িত হন। ফলে কর্মজীবনে এক জায়গায় বেশিদিন থাকার নিশ্চয়তা থাকে না।
পররাষ্ট্র ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রযোজ্য
সহকারী সচিব
⬇
সিনিয়র সহকারী সচিব
⬇
পরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
⬇
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব
⬇
সচিব/পররাষ্ট্র সচিব
মিশনের জন্য প্রযোজ্য (দূতাবাসে পদায়ন হলে):
৩য় সচিব
⬇
১ম/২য় সচিব
⬇
কাউন্সিলর
⬇
মিনিস্টার
⬇
অ্যাম্বাসেডর/হাইকমিশনার
০২. প্রশাসন ক্যাডার
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা মূলত প্রশাসনিক ও নীতি-নির্ধারণী কাজে নিয়োজিত থাকেন। বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
পদোন্নতির সুযোগ: এই ক্যাডারে মাঠ প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসক (DC) বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সর্বশেষ মন্ত্রি পরিষদ সচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আকর্ষণীয় পদায়ন: BCS প্রশাসন কর্মকর্তাগণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
সামাজিক মর্যাদা: BCS প্রশাসন কর্মকর্তাগণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন ও উন্নয়ন কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে সরাসরি ভূমিকা রাখেন।
ভাতা সংক্রান্ত সুবিধা: সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। সরকারি গাড়ি, বাসস্থান, সরকারি কোয়ার্টার সুবিধা পেয়ে থাকেন।
উচ্চ শিক্ষার সুযোগ: এই ক্যাডারে বিদেশে প্রশিক্ষণ সেমিনার ও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি দেশে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা (BPATC, BCS Administration Academy) রয়েছে এই ক্যাডারদের।
বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ: এই ক্যাডারে UNO, সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় ও মিশনে দেশের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা: বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ পেনশন ও অবসরকালীন সকল আর্থিক সুবিধা ও ভাতা পেয়ে থাকেন।
চ্যালেঞ্জ ও ক্ষমতা: এই ক্যাডারগণ মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উন্নয়ন প্রকল্প তদারকি ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার ক্ষমতা লাভ করে থাকেন।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের অসুবিধা:
প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সুযোগের পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধাও রযেছে। যা নিচে তুলে ধরা হলো-
অতিরিক্ত কাজের চাপ: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের মাঠ প্রশাসনে অফিস সময়ের বাইরেও কাজ করতে হয়। হঠাৎ জরুরি বৈঠক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ভ্রাম্যমাণ আদালত সব মিলিয়ে নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা থাকেনা।
কর্মক্ষেত্র স্থানান্তর ও পদায়ন সমস্যা: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের যেকোনো সময় বদলি হতে পারে (উপজেলা-জেলা-মন্ত্রণালয় পর্যন্ত) । পরিবারের সঙ্গে থাকা সবসময় সম্ভব হয় না।
রাজনৈতিক চাপ: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের মাঠ প্রশাসনে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের চাপ ও প্রভাব মোকাবিলা করতে হয়। ন্যায়-অন্যায় সীমারেখা মেনে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়।
দূর্গম এলাকায় পোস্টিং: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের শুরুতে প্রত্যন্ত উপজেলায় চাকরি হতে পারে।
প্রশাসনিক জটিলতা: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের নীতিনির্ধারণী কাজে অতিরিক্ত ফাইলপত্র, ধীরগতি ও প্রশাসনিক জটিলতা মানসিক চাপ বাড়ায়।
ব্যক্তিগত সময়ের অভাব: বিএসএস প্রশাসন ক্যাডারদের পরিবার ও ব্যক্তিগত জীবনের জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া কঠিন।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
মাঠ প্রশাসন:
সহকারী কমিশনার
⬇
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
⬇
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
⬇
জেলা প্রশাসক
⬇
বিভাগীয় কমিশনার
কেন্দ্রীয় প্রশাসন:
সহকারী সচিব
⬇
সিনিয়র সহকারী সচিব
⬇
উপ সচিব
⬇
যুগ্ম সচিব
⬇
অতিরিক্ত সচিব
⬇
সচিব
০৩. বিসিএস পুলিশ ক্যাডার
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় পুলিশ ক্যাডারেও রয়েছে নানাবিধ সুযোগ সুবিধা এবং অসুবিধা। সংক্ষেপে পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ সুবিধাসমূহ আলোচনা করা হলো।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস পুলিশ ক্যাডারগণ নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
প্রশিক্ষণ সুবিধা: পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ ‘সারদা’ একাডেমিতে প্রশিক্ষণের সুবিধা লাভ করেন। পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স ইন পুলিশ সায়েন্স ডিগ্রি লাভ করতে পারেন।
রেশন সুবিধা: পুলিশ ক্যাডারগণ নিজের ও পরিবারের জন্য সরকারি রেশন ও অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকে।
গাড়ি সুবিধা: একজন পুলিশ ক্যাডার চাকরির শুরুতেই গাড়ি, বাংলা, বডিগার্ডসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি পেয়ে থাকে।
পদোন্নতির সুযোগ: চাকরির শুরুতে একজন পুলিশ ক্যাডার সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করে। এরপর পদোন্নতি পেয়ে যথাক্রমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপার, অতিরিক্তি ডিআইজি, ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজিপি ও আইজিপি পর্যন্ত পদোন্নতি হতে পারেন।
জাতিসংঘের শান্তি মিশনে কাজ করার সুযোগ: পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ এর সুযোগসহ বিশাল অঙ্কের আর্থিক সুযোগ সুবিধা লাভ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
সরকারি খরচে দেশের বাইরে প্রশিক্ষণ সুবিধা: পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন ধরনের উচ্চ ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণের জন্য সরকারি খরচে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ লাভ করে থাকেন।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের অসুবিধা:
পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ নানাবিধ সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধারও সম্মুখীন হয়ে থাকেন। নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
ঝুঁকিপূর্ণ পেশা: পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সরাসরি ফ্রন্টলাইনে নিয়োজিত থাকে। তাই স্বাভাবিকভাবে নানা ধরনের হুমকী ও প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকে।
ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স করা কঠিন: পুলিশ ক্যাডারদের কোনো নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা না থাকায় পরিবারকে সময় দেওয়া অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এমনকি ক্রান্তিলগ্নে ২৪ ঘন্টাই ডিউটি করায় কাজ ও পরিবার সামলানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ছুটির অনিশ্চয়তা: যেহেতু পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্তগণ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োাজিত থাকেন সেহেতু ছুটি গ্রহণের ক্ষেত্রে নানাবিধ জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়।
রাজনৈতিক চাপ: পুলিশ ক্যাডার যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন সেহেতু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সুপারিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের চাপের কারণে স্বাধীনভাবে কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
পুলিশ ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
চাকরির শুরুতে একজন পুলিশ ক্যাডার সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে যথাক্রমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত ডিআইজি, ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজি ও আইজিপি পর্যন্ত হওয়া যায়।
সাধারণ পুলিশ অঞ্চলগুলোর পদায়ন সিস্টেম
সহকারী পুলিশ সুপার
⬇
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
⬇
পুলিশ সুপার
⬇
অতিরিক্ত ডিআইজি
⬇
ডিআইজি
⬇
অতিরিক্ত আইজিপি
⬇
আইজিপি
মেট্রোপলিটন এলাকায় পদায়ন সিস্টেম
সহকারী পুলিশ কমিশনার
⬇
উপপুলিশ কমিশনার
⬇
যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
⬇
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার
⬇
পুলিশ কমিশনার
⬇
সচিব
০৪. বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার [শুল্ক ও আবগারি]
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় পদ। তাইতো অধিকাংশ BCS প্রত্যাশীরা বিসিএস ক্যাডার চয়েজলিস্টে এই ক্যাডার প্রথমে রাখেন। দেশের রাজস্ব আদায়, অডিট করা, অবৈধ আমদানি রোধ সহ নানাবিধ কার্যক্রম এই ক্যাডারের এখতিয়ারভুক্ত।
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
নিরিবিলি কর্মপরিবেশ ও রাজনৈতিক চাপমুক্ত পরিবেশে এ ক্যাডারের সুপারিশকৃত কর্মকর্তারা নানাবিধ সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। নিচে BCS কাস্টমস ক্যাডাদের সুযোগ সুবিধা তুলে ধরা হলো-
যাতায়াতে গাড়ি সুবিধা: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারগণ চাকরির শুরুতেই যাতায়াতের জন্য গাড়ির সুবিধা পেয়ে থাকে।
পুরস্কার লাভের সুযোগ: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারগণ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া বিভিন্ন চোরাচালান ধরিয়ে দিতে পারলে মূল্য ভেদে ১০-৪০% পর্যন্ত পুরস্কার লাভের সুযোগ রয়েছে।
অডিট করার সুযোগ: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারগণ শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করে। যেখানে ট্যাক্স রিটার্ন অডিট করে কর ফাঁকি উদঘাটন করা থেকে যথাযথ কর নির্ধারকের ভূমিকা পালন করে থাকে।
উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারগণ সরকারি খরচে দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভ করে থাকেন।
আবাসন সুবিধা: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ সরকারি কোয়ার্টারে আবাসন সুবিধা লাভ করে থাকেন।
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ চ্যালেঞ্জর সাথে স্বীয় কার্য সম্পাদন করে থাকেন। যদিও এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ নানাবিধ সুবিধা লাভ করে থাকেন তথাপি অসুবিধাও কম নয়। নিচে এই ক্যাডারের কিছু অসুবিধা তুলে ধারা হলো।
কাজের চাপ বেশি: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারদের দপ্তরভেদে কাজের চাপ অনেক বেশি। যে কোনো সময় মাঠ পর্যায়ে অডিট চোরাচালানরোধ ও অবৈধ আমদানি রপ্তানি রোধে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
পোস্টিং সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা: এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ বেশিরভাগ সময় বড় শহর, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর বা সীমান্ত এলাকাভিত্তিক পোস্টিং পায়। গ্রামে বা নিজ এলাকায় পোস্টিংয়ের সুযোগ প্রায় নেই বললে চলে।
বিপজ্জনক পরিবেশ ও ঝুঁকি: বিসিএস কাস্টমস কর্মকর্তারা মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান, অবৈধ আমদানি রপ্তানি ইত্যাদির সঙ্গে সরাসরি লড়াই করে। যা অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক পরিবেশে পরিণত হয়।
চাপ ও প্রলোভন: বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণদের পেশাগতভাবে দুর্নীতি ও অবৈধ প্রলোভনের মুখোমুখি হতে হয়। সৎভাবে কাজ করলে অনেকসময় চাপ বা হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। তাই নৈতিকতার সঙ্গে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারের পদক্রম/পদসোপান:
বিসিএস কাস্টমস কর্মকর্তাগণ শুরুতেই ৯ম গ্রেড থেকে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে তাদের বদলি ও পদোন্নতি হয়ে থাকে-
সহকারী কমিশনার
⬇
উপ-কমিশনার
⬇
যুগ্ম কমিশনার
⬇
অতিরিক্ত কমিশনার
⬇
কমিশনার
⬇
এনবিআর সদস্য
০৫. বিসিএস অডিট ক্যাডার
বিসিএস অডিট ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় অডিট ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
বিসিএস অডিট ক্যাডারদের সকল গেজেটেড অফিসার এর উপরে খরবদারি করার সুযোগ রয়েছে। গেজেটেড অফিসার হওয়ায় সামাজিক ও প্রশাসনিক মর্যাদা পাওয়া যায়।
এই ক্যাডারগণ সরকার নির্ধারিত জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন, হাউজ রেন্ট, মেডিকেল, ট্রান্সপোর্টসহ বিভিন্ন ভাতা পেয়ে থাকেন।
এই ক্যাডারগণ সরকারী চাকরি হওয়ায় আজীবন কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পান।
এই ক্যাডারগণ যোগ্য ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে উচ্চ পদে উত্তরণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
এই ক্যাডারগণ অবসরের পর পেনশন, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।
এই ক্যাডারগণ সরকারি গাড়ি, সরকারি আবাসন সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা, সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
অডিট ক্যাডার হলো স্থিতিশীল, মর্যাদাপূর্ণ এবং সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার।
বিসিএস অডিট ক্যাডারের অসুবিধা:
অডিট ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ নানাবিধ সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধারও সম্মুখীন হয়ে থাকেন। নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
BCS অডিট ক্যাডারদের বছরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অডিট রিপোর্ট তৈরি, পরিদর্শন ও হিসাব যাচাইয়ের কারণে প্রচুর কাগজপত্রের কাজ করতে হয়। পাশাপাশি ডেডলাইন মেনে কাজ শেষ করা অনেক সময় কষ্টকর হয়ে যায়।
BCS অডিট ক্যাডারদের সরকারি অফিসগুলোতে প্রকল্প ও দপ্তরে অডিট করার জন্য সারাদেশে সফরে যেতে হয়। দীর্ঘ সময় পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়।
BCS অডিট ক্যাডারদের মূলত হিসাব যাচাই ও রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব নিতে হয়। অনেক সময় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
BCS অডিট ক্যাডারদের অডিটে কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিরোধ বা সম্পর্কের টানাপোড়েন হতে পারে।
BCS অডিট ক্যাডারদের হিসাব-নিকাশ, নথি যাচাই, টেবিল ও রিপোর্ট- এই ধরনের কাজ কারবার করতে হয়। যারা চ্যালেঞ্জিং ও বৈচিত্র্যময় মাঠপর্যায়ের কাজ পছন্দ করেন, তাদের কাছে একঘেয়ে লাগতে পারে।
BCS অডিট ক্যাডারদের কোনো বড় অডিট রিপোর্টে অনিয়ম ধরা পড়লে রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক চাপের মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
অডিট ক্যাডার একটি সম্মানজনক ও নিরাপদ ক্যারিয়ার হলেও কাজের চাপ, বারবার সফর, ধীর পদোন্নতি এবং সীমিত প্রশাসনিক ক্ষমতা এর বড় চ্যালেঞ্জ।
অডিট ক্যাডারের পদসোপান:
সহকারী মহা হিসাব নিরীক্ষক
⬇
সিনিয়র সহকারী মহাহিসাব নিরীক্ষক
⬇
ডেপুটি ডিরেক্টর/উপ-পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
অডিট জেনারেল অফিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা
⬇
ডিরেক্টর জেনারেল
⬇
কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল
০৬. বিসিএস কর ক্যাডার
বিসিএস কর ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
BCS কর ক্যাডারগণ প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়ে থাকেন।
BCS কর ক্যাডারগণ জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা, বাংলা নববর্ষ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন।
BCS কর ক্যাডারগণ কর সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনায় সরাসরি ভূমিকা পালন করেন। তাছাড়া অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারদের।
BCS কর ক্যাডারগণ কর কমিশনার, মহাপরিচালক, সচিবালয় বিভিন্ন দায়ত্বে কাজের সুযোগ রয়েছে।
BCS কর ক্যাডারগণ সরকারি চাকরীর পূর্ণ নিরাপত্তা লাভ করে থাকেন। এই ক্যাডারদের অবসরের পর পেনশন, গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা রয়েছে।
BCS কর ক্যাডারগণ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ট্রেনিং ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
BCS কর ক্যাডারগণ নিজস্ব অফিস রুম, স্টাফ, গাড়ি ও সরকারি বাসায় থাকার সুযোগ রয়েছে।
BCS কর ক্যাডারগণ সমাজে প্রভাবশালী অবস্থান, নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
বিসিএস কর ক্যাডারের অসুবিধা:
কর ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ নানাবিধ সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধারও সম্মুখীন হয়ে থাকেন। নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো:
BCS কর ক্যাডারদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিপুল পরিমাণ ট্যাক্স রিটার্ন, অডিট ও তদন্ত করতে হয়। করদাতাদের চাপ ও মামলার জটিলতা সামলাতে হয়।
BCS কর ক্যাডারদের কর আদায়ের ক্ষেত্রে করদাতাদের সঙ্গে প্রায়ই বিরোধ বা অস্বস্তিকর পরিস্থিত তৈরি হয়। ঘুষ/দুর্নীতির চাপ বা প্রলোভন এড়াতে সততা বজায় রাখা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে।
BCS কর ক্যাডারদের চাকরি মূলত মফস্বলভিত্তিক হয়ে থাকে। ফলে শহরে কাজ করার সুযোগ কম থাকে।
এই ক্যাডারদের কর সংক্রান্ত আইন জটিল এবং নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। সবকিছু আপডেট রাখতে হয়। কর ফাঁকি ও মামলা-মোকদ্দমা সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে।
এই ক্যাডারদের কর আদায় করতে গিয়ে অনেক সময় অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
এই ক্যাডারদের অনলাইন ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, সফটওয়্যার ব্যবহারে দক্ষ হতে হয়। নতুন আইন, প্রযুক্তি ও করনীতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারলে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।
বিসিএস কর ক্যাডারের পদসোপান:
সহকারী কর কমিশনার
⬇
কর কমিশনার
⬇
উপ-কর কমিশনার
⬇
যুগ্ম কর কমিশনার
⬇
অতিরিক্ত কর কমিশনার
⬇
কর কমিশনার
⬇
মহাপরিচালক (NBR)
⬇
সদস্য (NBR)
⬇
চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
⬇
সচিব/সিনিয়র সচিব
০৭. বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্যাডার সার্ভিসগুলোর একটি। শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহীদের জন্য এটি অত্যন্ত সম্মানজনক ও স্থিতিশীল চাকরি। সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকতা করে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে কাজ করে সরকারের শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করাই শিক্ষা ক্যাডারের দায়িত্ব।
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারদের সুযোগ সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
চাকরির নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব: বাংলাদেশ কর্মকমিশন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ক্যাডারগণ বাংলাদেশের স্থায়ী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পূর্ণ নিরাপত্তা লাভ করে থাকে।
সম্মানজনক পেশা: শিক্ষক হিসেবে সামাজিক মর্যাদা ও সম্মানলাভের সুযোগ রয়েছে।
বেতন ও ভাতা: শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন লাভের পাশাপশি বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসাভাতা, উৎসবভাতা, শিক্ষা ভাতা প্রভৃতি সুবিধা পেয়ে থাকে।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ: দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য সরকারি স্কলারশিপ বা লিভ ফর হায়ার স্ট্যাডিজ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন: এ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের সুব্যবস্থা রয়েছে।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের অসুবিধা:
যেমন প্রতিটি ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা আছে, তেমনি কিছু সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধাও রয়েছে নিচে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলো ধরা হলো-
ধীর পদোন্নতি: শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় ধীরগতি সম্পন্ন। অনেক সময় একই পদে দীর্ঘদিন থাকে হয়।
পোস্টিং সমস্যা: প্রথমে অনেক সময় দূরবর্তী বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং হয়, যা অনেকের জন্য কষ্টকর।
গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার সীমাবদ্ধতা: এ পদে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকলেও, সময়মতো ছুটি বা সুযোগ না মেলার কারণে অনেকেই গবেষণা/পিএইচডি করতে সমস্যায় পড়েন।
পদোন্নতির বৈষম্য: বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ অনেক সময় সিনিয়র-জুনিয়র বৈষম্য বা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে প্রাপ্য পদোন্নতির সুযোগ পেতে দেরি হয়।
অতিরিক্ত দায়িত্ব: শুধু ক্লাস নেওয়া নয়, প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনও করতে হয় এই পদের কর্মকর্তাগণদের যেমন: পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, বোর্ড সংক্রান্ত কাজ প্রভৃতি।
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের পদসোপান:
লেকচারার/প্রভাষক
⬇
অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর/সহকারী অধ্যাপক
⬇
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর/সহযোগী অধ্যাপক
⬇
প্রফেসর/অধ্যাপক
০৮. বিসিএস খাদ্য ক্যাডার
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (BCS) খাদ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাডার। মূলত খাদ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন এ ক্যাডারের সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ।
বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস খাদ্য ক্যাডারগণ নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
সামাজিক মর্যাদা: বিসিএস খাদ্য ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ প্রথম শ্রেণির অফিসার হিসেবে মাঠ পর্যায়ে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া গেজেটেড অফিসার হিসেবে উচ্চ সামাজিক মর্যাদা লাভ করে থাকেন।
পদোন্নতির সুযোগ: এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক থেকে শুরু করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, আঞ্চলিক পরিচালক এবং ঊর্ধ্বতন পদে পদোন্নতির সুযোগ থাকে।
প্রশিক্ষণ ও বিদেশে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ: এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণদের সরকারি খরচে দেশের ভিতর ও বাইরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ থাকে।
চাকরির ক্ষেত্র বৈচিত্র্যপূর্ণ: এ ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ খাদ্য সংগ্রহ, গুদাম ব্যবস্থাপনা, খাদ্যশস্য সংরক্ষণ, ন্যায্য বিক্রয়, টিসিবি কার্যক্রম তদারকি ইত্যাদি কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে।
চাকরির নিরাপত্তা: যেহেতু বিসিএস ক্যাডারগণ সরকারের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা সেহেতু দায়িত্বশীলভাবে কাজ করলে এ পদে শতভাগ চাকরির নিরাপত্তা নিহিত।
বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের যেমন সুবিধা আছে তেমন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধা রয়েছে। নিচে বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো-
দূরবর্তী এলাকায় কর্মস্থল: খাদ্য গুদাম বা সংগ্রহ কেন্দ্র সাধারণত গ্রামাঞ্চলে থাকায় এই ক্যাডারের সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং হয়। যা এই ক্যাডারদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
জনসাধারণের সাথে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি: খাদ্য সংকট, ন্যায্য মূল্যে কার্ড বিতরণ বা টিসিবি কার্যক্রমে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হলে এই ক্যাডার কর্মকর্তাগণ সরাসরি মাঠ পর্যায় বা বাজার পর্যায়ে কাজ করতে হয়। ফলে জনসাধারণের অসন্তোষের কারণ হয়ে যায়।
দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধ ঝুঁকি: এই ক্যাডারদেরখাদ্য গুদাম, চাল-গম সংগ্রহ ও বিতরণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ বা চাপের মুখোমুখি হতে হয়।
কর্মপরিধি বেশ বিস্তৃত: খাদ্য সংগ্রহ, গুদাম ব্যবস্থাপনা, রেশন কার্যক্রম, বাজার নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি একসাথে সামলাতে হয়। তাই কাজের চাপ বেশি থাকে।
চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব: খাদ্য নিরাপত্তা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই সামান্য ত্রুটি বা অব্যবস্থাপনার জন্য বড় ধরনের সমালোচনার স্বীকার হতে হয়। যা এই ক্যাডারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
বিসিএস খাদ্য ক্যাডারের পদসোপান:
সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক
⬇
খাদ্য পরিদর্শক
⬇
আঞ্চলিক খাদ্য পরিদর্শক
⬇
পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
০৯. বিসিএস আনসার ক্যাডার
বিসিএস আনসার ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় আনসার ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
আনসার ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলো মূলত বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাঠামো অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
BCS আনসার ক্যাডারগণ জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড অনুযায়ী বেতন ও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকেন।
BCS আনসার ক্যাডারগণ নির্দিষ্ট সময় ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি লাভের সুযোগ পেয়ে থাকেন। মাঠ প্রশাসনে পুলিশ প্রশাসনের সাথে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের সুযোগ রয়েছে।
আনসার ক্যাডার অফিসারদের জন্য ব্রিটিশ প্রশাসনের সময় থেকে আবাসনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া সরকারি হাসপাতাল ও সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারদের অবসরের পর পেনশন, গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
বিসিএস আনসার ক্যাডারদের জন্য ভ্রমণভাতা, চিকিৎসা ভাতা, আবাসন ভাতার সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারদের বাংলাদেশ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি এই ক্যাডারদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারদের জননিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় সামাজিক মর্যাদা লাভ করে থাকেন।
এই ক্যাডারদের সরকারি গাড়ি ও অফিসিয়াল পরিবহন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া সরকার ঘোষিত ছুটি, উৎসব ভাতা, বোনাস ইত্যাদি সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারে।
বিসিএস আনসার ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস আনসার ক্যাডারের যেমন সুবিধা আছে তেমন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধা রয়েছে। নিচে বিসিএস আনসার ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো-
বিসিএস আনসার ক্যাডারে অন্যান্য জনপ্রিয় ক্যাডারের তুলনায় পদোন্নতি ধীরগতি সম্পন্ন। এই ক্যাডারে সিনিয়রটির মাধ্যমে পদোন্নতির সুযোগ হয়ে থাকে।
এই ক্যাডারে প্রশাসন বা পররাষ্ট্র বা পুলিশ ক্যাডারের মতো উচ্চ সুবিধা নেই। বড় শহর বা মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং তুলনামূলক কম হয়।
এই ক্যাডারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, গ্রাম প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা কাজে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হয়। অনেক সময় সংঘর্ষ বা অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়।
এই ক্যাডারে প্রত্যন্ত এলাকায় পোস্টিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই পরিবার থেকে অনেক সময় দূরে থাকতে হয়।
এই ক্যাডারে প্রশাসন, পুলিশ বা পররাষ্ট্র ক্যাডারের তুলনায় সামাজিক মর্যাদা কিছুটা কম।
আনসার বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনায় বাজেট সীমাবদ্ধতা থাকে। কাজের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা সবসময় আধুনিক নয়।
বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ে কাজের কারণে কাজের চাপ বেশি থাকে।
বিসিএস আনসার ক্যাডারের পদসোপান:
সহকারী পরিচালক
⬇
উপপরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
উপ-মহাপরিচালক (ADG)
⬇
মহাপরিচালক (DG)
১০. বিসিএস সমবায় ক্যাডার
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় সমবায় ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
সমবায় ক্যাডারের কর্মকর্তারা মূলত সমবায় খাতের উন্নয়ন, সমবায় সমিতি গঠন ও পরিচালনা, তদারকি, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত থাকেন।
এই ক্যাডারগণ সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী ভালো বেতন, উৎসব ভাতা, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, চিকিৎসা ভাতা, পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা পেয়ে থাকেন। এছাড়া সরকারি গাড়ি বা অফিসের পরিবহন সুবিধা লাভ করে থাকেন।
এই ক্যাডারগণ ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়মিত পদোন্নতির সুযোগ লাভ করে থাকেন। উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে এবং সর্বোচ্চ মহাপরিচালক (DG) পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ পাওয়া যায়।
এই ক্যাডারদের সমবায় সমিতির নিবন্ধন, তদারকি ও আর্থিক নিরীক্ষা করার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকে।
এই ক্যাডারদের সরকারি ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে সম্মান ও সামাজিক মর্যাদা লাভের সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব প্রদান ও জনগণের কাছে পরিচিতি লাভের সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারদের সমবায় সমিতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও স্বনির্ভরতা গড়ে তুলতে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে। পাশাপাশি কৃষি, ক্ষুদ্র ঋণ, মহিলা সমবায়, দুগ্ধ সমবায় ইত্যাদি খাতে কাজ করার মাধ্যমে বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের যেমন সুবিধা আছে তেমন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধা রয়েছে। নিচে বিসিএস সমবায় ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো-
অধিকাংশ সময় সমবায় ক্যাডারে উপজেলা বা গ্রামীণ পর্যায়ে পোস্টিং হতে হয়, ফলে শহরের জীবনের সুবিধা কম পাওয়া যায়। মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় রাজনৈতিক চাপ বা স্থানীয় নেতাদের প্রভাব মোকাবিলা করতে হয়।
এই ক্যাডারের কাজের ক্ষেত্র তুলনামূলক একঘেয়ে, মূলত সমবায় সমিতি তদারকি ও আর্থিক নিরীক্ষন নিয়েই সীমাবদ্ধ।
এই ক্যাডাররা পুলিশ ক্যাডারে, প্রশাসন ক্যাডার এর তুলনায় পদোন্নতির সুযোগ সীমিত এবং ধীর গতিসম্পন্ন। উচ্চ পর্যায়ে পদসংখ্যা কম থাকায় দীর্ঘসময় একই পদে থাকতে হতে পারে।
এই ক্যাডারের প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা কাস্টমস ক্যাডারের মতো সামাজিক মর্যাদা বা ব্যাপক ক্ষমতা নেই।
এই ক্যাডারের সমবায় সমিতিতে দুর্নীতি ও অনিয়ম থাকায় অনেক সময় জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দ সীমিত থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন করা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিসিএস সমবায় ক্যাডার হলো মাঠমুখী একটি ক্যাডার, সেখানে সরকারি চাকরির সকল আর্থিক সুবিধা থাকলেও শহরে পোস্টিং, দ্রুত পদোন্নতি ও অধিক মর্যাদার সুযোগ তুলনামূলক কম।
বিসিএস সমবায় ক্যাডারের পদসোপান:
সহকারী নিবন্ধক
⬇
জেলা সমবায় কর্মকর্তা
⬇
উপ-পরিচালক (DD)
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
যুগ্ম পরিচালক
⬇
উপ-মহাপরিচালক
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক (DG)
১১. বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডার
বিসিএস পরিকল্পনা ক্যাডার দেশের পরিকল্পনা কমিশন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগে কাজ করার নিমিত্তে সৃষ্ট একটি মর্যাদাপূর্ণ ক্যাডার। এই ক্যাডারের মাধ্যমে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে সরাসরি অবদান রাখার সুযোগ থাকে।
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে নানাবিধ সুবিধা রয়েছে। যা নিম্নরূপ-
রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে অংশগ্রহণ: বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারজাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি), এবং বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
বহুমুখী কর্মক্ষেত্র: এই ক্যাডারদেরপরিকল্পনা কমিশন, অর্থমন্ত্রণালয়, পরিসংখ্যান ব্যুরো, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সরকারি সংস্থায় কাজ করার সুযোগ থাকে।
নীতিনির্ধারণী ভূমিকা: এই ক্যাডারদেরসরকারি উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন, প্রকল্প বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ থাকে।
প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ: এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ দেশ-বিদেশে ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ লাভ করে থাকেন।
অন্যান্য সুবিধা: এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাগণ উপযুক্ত সুবিধা ছাড়াও আকর্ষণীয় বেতন, ভাতা, বাসস্থান, চিকিৎসা, গাড়িভাতা, অবসরে পেনশনসহ নানাবিধ সুবিধালাভ করে থাকেন।
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস পরিকল্পনা ক্যাডার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে। এর মূল দায়িত্ব হলো পরিবার/পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, মা ও শিশুস্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা। তবে এই দায়িত্বপালনে নানাবিধ চ্যালঞ্জ বিদ্যমান যা নিম্নে আলোচন করা হলো-
গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় পদায়ন: এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণদের অধিকাংশ সময় মাঠপর্যায়ে কাজ করতে হয়; ফলে দূরবর্তী গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘসময় থাকা লাগে।
প্রচন্ড কর্মচাপ: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম তদারকির কারণে সব সময় ব্যাপক দায়িত্ব বহন করা লাগে এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তগণদের।
প্রশাসনিক জটিলতা: ঊর্ধ্বতন প্রশাসন, মাঠ পর্যায় ও জনগণের সাথে সমন্বয় করতে গিয়ে নানা প্রশাসনিক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণদের।
অতিরিক্ত দায়বদ্ধতা: এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত কর্মকর্তাদের পরিবার পরিকল্পনা ছাড়াও মা-শিশু স্বাস্থ্য, টিকাদানসহ অন্যান্য কাজও করতে হয়।
মাঠপর্যায়ে জবাবদিহিতা: এই ক্যাডারদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সরাসরি পর্যালোচনার আওতায় থাকায় সবসময় চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়।
বিসিএস পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের পদসোপান:
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা
⬇
সহকারী পরিচালক
⬇
উপ-পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক (ডিজি)
১২. বিসিএস তথ্য ক্যাডার
বিসিএস তথ্য ক্যাডার বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ক্যাডার সার্ভিস। এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ মূলত তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্বে থাকেন।
বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ নানারূপ সুবিধা পেয়ে থাকেন। নিচে এগুলো তুলে ধরা হলো-
সম্মানজনক পেশা: তথ্য ক্যাডারগণ গণমাধ্যম, তথ্য ও সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে যুক্ত থাকার কারণে সামাজিক মর্যাদা ও সম্মান পেয়ে থাকেন।
বিভিন্ন দায়িত্বে কাজ করার সুযোগ: বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন, ফিল্ম ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ থাকে।
সৃজনশীল কাজের পরিবেশ: তথ্য ক্যাডারগণ সৃজনশীল পরিবেশে কাজ করে থাকে। সংবাদ সংগ্রহ, প্রচার, জনসংযোগ, মিডিয়া, ব্যবস্থাপনা ও সংস্কৃতি বিষয়ক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে।
বিদেশে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা: বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
সরকারি সুযোগ সুবিধা: অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ সরকারি যাবতীয় সুযোগ সুবিধা যেমন- বেতন, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, পেনশন ইত্যাদি লাভ করে থাকে।
বিসিএস তথ্য ক্যাডারের অসুবিধা:
প্রতিটি ক্যাডারের যেমন সুবিধা আছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। নিম্নে বিসিএস তথ্য ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো-
রাজনৈতিক চাপ: বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ সরকারের তথ্য ও প্রচার ব্যবস্থাপনায় যুক্ত থাকার কারণে রাজনৈতিক চাপ ও প্রভাব মোকাবিলা করতে হয়।
মিডিয়ার সহিত সমন্বয়ে ঝামেলা: যেহেতু তথ্য ক্যাডারগণ মিডিয়া সম্পর্কিত কাজ করে থাকে সেহেতু সাংবাদিক, টেলিভিশন, রেডিওসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাথে কাজ করতে গিয়ে সমন্বয়ের জটিলতা দেখা দেয়।
কাজের চাপ: বিসিএস তথ্য ক্যাডারগণ গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, বিদেশি অতিথি বা সরকারি বড় ইভেন্ট থাকলে ২৪ ঘন্টার মতো কাজের চাপ থাকে।
দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ কম: প্রশাসন বা কাস্টমস ক্যাডারের তুলনায় বিসিএস তথ্য ক্যাডারে পদোন্নতির সুযোগ কম।
পোস্টিং জটিলতা: এই ক্যাডারের পোস্টিং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঢাকা ও শহর কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। সুতরাং যে সমস্ত ক্যাডারগণ গ্রাম্য পরিবেশে বা নিজ গ্রামের কাছাকাছি থাকতে চান এমনদের জন্য অসুবিধা হতে পারে।
বিসিএস তথ্য ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী তথ্য কর্মকর্তা
⬇
তথ্য কর্মকর্তা
⬇
উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা
⬇
অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা
⬇
অতিরিক্ত সচিব/সচিব
১৩. বিসিএস ডাক ক্যাডার
বিসিএস ডাক ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় ডাক ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
বিসিএস ডাক ক্যাডার হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগে অফিসার হিসেবে যোগ দেওয়ার একটি মর্যাদাপূর্ণ পদ। সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন; নবম গ্রেডে যোগদান, বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, উৎসব, বিশেষ ভাতা ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সরকারি পেনশন সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারগণ ডাকঘর, ডাক অধিদপ্তরে ও ডাক বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে কাজ করে থাকেন। পাশাপাশি মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারদের সরকারি আবাসন সুবিধা, সরকারি যানবাহন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারগণ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে সমাজে সম্মান ও মর্যাদা পেয়ে থাকেন।
সারাদেশে বিস্তৃত ডাক ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ থাকে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারের অসুবিধা:
যদিও ডাক ক্যাডারে চাকরির অনেক সুবিধা আছে। তবুও কিছু সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ বিদ্যামান রয়েছে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারগণ মূলত প্রশাসনিক ও সেবামূলক হওয়ায় তাদের কাজের ধরণ তুলনামূলকভাবে একঘেয়ে। সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা সীমিত, অনেক সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়।
এই ক্যাডারে পদোন্নতি তুলনামূলকভাবে ধীরগতির, উচ্চপদে উন্নীত হতে সময় বেশি লাগে। অন্যান্য শক্তিশালী ক্যাডারের তুলনায় পদোন্নতির সুযোগ কম।
এই ক্যাডারে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিংয়ের সম্ভাবনা থাকে, যেখানে অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা সীমিত। কিছু জায়গায় আবাসন ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।
এই ক্যাডারে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের কারণে চিঠি-পত্রের ব্যবহার কমে আসছে, ফলে ডাক বিভাগের অনেক সেবা বর্তমানে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
এই ক্যাডারে কুরিয়ার ও বেসরকারি ডাক সেবার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাছাড়া কর্মক্ষেত্রে আধুনিকায়নের চাপ ও সীমিত সম্পদ দিয়ে কাজ করার সমস্যাও সৃষ্টি হয়।
ডাক ক্যাডারকে অন্যান্য জনপ্রিয় ক্যাডার এর তুলনায় কম মর্যাদাপূর্ণ ধরা হয়।
ডাক ক্যাডারে চাকরি স্থিতিশীল ও সম্মানজনক হলেও ক্যারিয়ার অগ্রগতি, সামাজিক প্রভাব এবং কর্মক্ষেত্রের আধুনিক চ্যালেঞ্জগুলো এটিকে কিছুটা সীমাবদ্ধ করে তোলে।
বিসিএস ডাক ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী ডাক পরিদর্শক
⬇
সহকারী পরিচালক
⬇
সিনিয়র সহকারী পরিচালক
⬇
উপ পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
উপ মহাপরিচালক
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
১৪. বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডার (পরিবহন ও বাণিজ্য)
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগে প্রকৌশল, রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা ও প্রশাসনিক কাজের দায়িত্ব পালন করে থাকে।
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নানারূপ সুবিধা পেয়ে থাকেন। নিচে বেশকিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো-
পদোন্নতির সুযোগ: বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারগণ অন্যান্য ক্যাডারের মতো আজীবন চাকরির নিশ্চয়তা ও নিয়মিত পদোন্নতির সুযোগ পেয়ে থাকে।
বাসস্থান সুবিধা: সরকারি বেতন স্কেল অনুযায়ী ভালো বেতন এবং বাড়িভাড়া, ভাতা, মেডিকেল ভাতা ইত্যাদি সুবিধা লাভ করে থাকে এই ক্যাডারগণ।
পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা: সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পেনশন, গ্রাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি পাওয়া যায়।
প্রযুক্তিগত দক্ষতা প্রয়োগ: প্রকৌশল ও টেকনিক্যাল বিষয়ে কাজ করার সুযোগ থাকায় দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এই ক্যাডারদের।
গণসেবায় অবদান: রেলওয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকে এই ক্যাডারদের।
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারে নানা সুবিধার পাশাপাশি বেশকিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিচে এই ক্যাডারের অসুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো-
কাজের চাপ: যাত্রী নিরাপত্তা, ট্রেনের সময়সূচি, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ সহ নানা দায়িত্বে চাপ বেশি থাকে এই ক্যাডারদের।
পোস্টিং সমস্যা: অনেক সময় দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত এলাকায় পোস্টিং হয়ে থাকে। যা পারিবারিক জীবনে প্রভাব ফেলে।
অপর্যাপ্ত অবকাঠামো: বাংলাদেশ রেলওয়ের যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো অনেক সময় পুরনো হওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়।
দুর্নীতি ও প্রশাসনিক জটিলতা: বিভিন্ন পর্যায়ের আমলাতান্ত্রিকতা ও দুর্নীতির কারণে কাজের গতিশীলতা কমে যায়।
রাজনৈতিক চাপ: কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা কাজ বাস্তবায়নে অসুবিধা হয়ে থাকে।
বিসিএস রেলওয়ে ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী প্রকৌশলী
⬇
নির্বাহী প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
১৫. বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডার মূলত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)-এর অধীনে কাস্টমস, ভ্যাট, এক্সাইজ ও ট্রেড সম্পর্কিত দায়িত্ব পালন করে থাকে। নিম্নে এই ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলো দেওয়া হলো-
আকর্ষণীয় কর্মক্ষেত্র: বাণিজ্য-ক্যাডার অফিসারগণ সাধারণত কাস্টমস হাউস, ভ্যাট-অফিস, এয়ারপোর্ট, সমুদ্রবন্দর ইত্যাদি জায়গা গুলোতে কাজের সুযোগ থাকে। তাছাড়া বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি খাত, অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ রয়েছে।
প্রশাসনিক ক্ষমতা ও মর্যাদা: আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব সংগ্রহ ও আইন প্রয়োগে ক্ষমতা রয়েছে এই ক্যাডার অফিসারদের।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: সরকারের রাজস্ব আয়ের বড় অংশ আসে এই ক্যাডারের মাধ্যমে। যার ফলে এই ক্যাডারে কাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাছাড়া সরকারের নীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
প্রশিক্ষণ ও বিদেশ সফর: এই ক্যাডারের অফিসারদের দেশি-বিদেশি ট্রেনিং, কর্মশালা, সেমিনারে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন- WTO, WCO প্রভৃতির কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সুবিধা ও প্রণোদনা: এই ক্যাডারের অফিসারগণ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বেতন, ভাতা, পেনশন, চিকিৎসা সুবিধা, বাসা বরাদ্দ, যানবাহন সুবিধা প্রভৃতি পেয়ে থাকেন। এছাড়া বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ইত্যাদিতে দায়িত্ব পালনের সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের অসুবিধাসমূহ:
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারে সুযোগ এর পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে এই ক্যাডারদের অসুবিধাসমূহ তুলে ধরা হলো-
দূরত্ব ও যাতায়াত সমস্যা: বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের অফিসারদের সমুদ্রবন্দর, বন্দরের পরিদর্শন, সীমান্ত অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে প্রান্তিক ও দুরবর্তী এলাকায় পোস্টিং হলে ব্যক্তিগত জীবন অসুবিধাপূর্ণ হয়ে থাকে।
দুর্নীতি ও প্ররোচনার সম্ভাবনা: এই ক্যাডারে আর্থিক লেনদেনে হস্তক্ষেপ করার কারণে দুর্নীতি প্রলোভন আসতে পারে। যার কারণে রাজনৈতিক চাপ থেকে যায় এই ক্যাডারের অফিসারদের । তাই সতর্ক ও নৈতিকতার সাথে কাজ করতে হয় এই ক্যাডার অফিসারদের।
দীর্ঘসময় দায়বদ্ধতা: এই ক্যাডারের অফিসারগণ কাস্টমস, ভ্যাট এক্সাইজ সম্পর্কিত নিয়মাবলী ও আইন নিয়মিত আপডেট করতে হয় যা এই ক্যাডারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
সময়সাপেক্ষ প্রশাসনিক কাজ: এই ক্যাডারে অফিসারগণ অফিস এবং মাঠে দুটি দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া কাগজপত্র প্রস্তুত, রিপোর্ট তৈরি, কমিশনারদের কাছে নির্ভুল প্রতিবেদন দাখিল করতে হয়। যার কারণে চ্যালেঞ্জ রয়েছে বাণিজ্য ক্যাডারে।
পোস্টিং ও লোকেশন সীমাবদ্ধ: এই ক্যাডারে শহরাঞ্চলে পোস্টিং হলেও সবসময় নিজের পছন্দের জায়গা পাওয়া যায় না। এছাড়া বিদেশে প্রশিক্ষণ বা ভ্রমণের সুযোগ অন্য অনেক ক্যাডারের তুলনায় কম পাওয়া যায়।
বিসিএস বাণিজ্য ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী কমিশনার
⬇
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা
⬇
অতিরিক্ত কমিশনার
⬇
যুগ্ম কমিশনার
⬇
উপ-কমিশনার
⬇
কমিশনার
⬇
মহাপরিচালক
১৬. বিসিএস কৃষি ক্যাডার
বিসিএস কৃষি ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তারা নানারূপ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। যা নিম্নরূপ-
কৃষি ক্যাডারের কর্মকর্তারা মূলত কৃষি সম্প্রসারণ, গবেষণা, কৃষকদের প্রযুক্তি সেবা প্রদান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজ করেন।
প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া যায়।
কৃষি ক্যাডার চাকরি স্থায়ী ও নিরাপদ, অবসর পর্যন্ত চাকরির নিশ্চয়তা থাকে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন ও ভাতা পাওয়া যায়।
জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন। হাউস রেন্ট, চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা, পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি সুবিধা।
কৃষি বিষয়ক উচ্চতর ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কর্মশালা ও সেমিনারে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে।
সরাসরি কৃষকদের সাথে কাজ করার সুযোগ থাকে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি প্রচার ও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা যায়।
অফিসে প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। যা কাজকে বৈচিত্র্যময় করে।
উপজেলা/জেলা পর্যায়ে সরকারি বাসস্থান, গাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যায়।
এই ক্যাডারগণ পেনশন, গ্র্যাচুইটি, অবসরের পর চিকিৎসা ও অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন।
বিসিএস কৃষি ক্যাডার শুধু একটি সম্মানজনক চাকরি নয়, বরং কৃষি উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সরাসরি অবদান রাখার সুযোগও দেয়।
বিসিএস কৃষি ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস কৃষি ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
বিসিএস কৃষি ক্যাডারদের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয়। প্রচুর ভ্রমণ ও মাঠকাজ করতে হয়, যা অনেক সময় কষ্টসাধ্য।
বিসিএস কৃষি ক্যাডারদের কৃষি মৌসুমে বীজবপন, ফসলকাটা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি সময়ে দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। একইসাথে প্রশাসনিক কাজ ও কৃষকদের সেবা দুটোই সামলাতে হয়।
এই ক্যাডারদের অধিকাংশ পোস্টিং উপজেলা/গ্রাম পর্যায়ে হয়ে থাকে। শহরে বা রাজধানীতে পোস্টিং পাওয়ার সুযোগ সীমিত।
এই ক্যাডারদের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা বা পোকামাকড়ের আক্রমণের সময় কর্মকর্তাদের সারাক্ষণ মাঠে থাকতে হয়। কৃষকদের ক্ষতি কমাতে জরুরি ব্যবস্থায় দিন-রাত পরিশ্রম করতে হয়।
বিসিএস কৃষি ক্যাডারগণ অনেক সময় আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি বা গবেষণার ফল মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দিতে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কৃষকদের সচেতনতার অভাবে কাজের ফলাফল দেরিতে আসে।
এই ক্যাডারদের উচ্চ পর্যায়ে পদ সীমিত হওয়ায় দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ কম। দীর্ঘ সময় একই পদে থাকতে হয়।
কৃষি ক্যাডারের মূল চ্যালেঞ্জ হলো- গ্রামীন এলাকায় দীর্ঘ সময় অবস্থান, প্রচুর মাঠকাজ, সীমিত আর্থিক সুবিধা ও ধীর পদোন্নতি।
বিসিএস কৃষি ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা
⬇
জেলা কৃষি কর্মকর্তা
⬇
উপপরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
১৭. বিসিএস মৎস্য ক্যাডার:
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
মৎস্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা মূলত মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, উন্নয়ন, গবেষণা, সম্প্রসারণ ও টেশসই ব্যবস্থাপনায় কাজ করেন। এই ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলো নিম্নে তুলো ধরা হলো-
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারগণ অফিসার হিসেবে সম্মান, সামাজিক মর্যাদা ও স্থায়ী চাকরির নিশ্চয়তা লাভ করে থাকেন।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারদের ৯ম গ্রেড থেকে বেতন স্কেল শুরু হয়। বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ইত্যাদি সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারদের মাঠপর্যায়ে উপজেলা মৎস্য অফিসে কাজ করতে হয়। বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট, মৎস্য অধিদপ্তর ও নীতি নির্ধারণী ও প্রশাসনিক দপ্তরে কাজের সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারদের দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ এর সুযোগ রয়েছে। ফলে আধুনিক প্রযুক্তি, মৎস্য চাষ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দক্ষতা অর্জিত হয়।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারদের মৎস্যসম্পদ রক্ষা, উৎপাদন বৃদ্ধি ও জনগণের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারে যোগ দিলে সরকারি চাকরির নিরাপত্তা, সামাজিক মর্যাদা, গবেষণা ও নীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখার সুযোগ থাকে।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস মৎস্য ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো-
এই ক্যাডার প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস ক্যাডারের মতো দ্রুত পদোন্নতি হয় না। উচ্চপদে পরিচালক, মহাপরিচালক পদসংখ্যা কম, ফলে ক্যারিয়ার গ্রোথ সীমিত হয়।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের কর্মক্ষেত্র মূলত উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকে। বিভাগীয় শহরে পোস্টিং তুলনামূলক কম।
এই ক্যাডারদের মাঠ পর্যায়ে মৎস্য চাষ, জেলেদের সমস্যার সমাধান, আইন প্রয়োগ সব একসাথে সামলাতে হয়।
এই ক্যাডারদের অন্যান্য ক্যাডারের মতো আর্থিক সুবিধা নেই। কিছু ভাতা ও সুযোগ-সুবিধায় সীমাবদ্ধতা থাকে।
এই ক্যাডারদের অনেক সময় গবেষণার ফল মাঠ পর্যায়ে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায় না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর হয় না।
এই ক্যাডারদের দূরবর্তী উপজেলায় পোস্টিং হলে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়।
এই ক্যাডারদের মাঠপর্যায়ে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা, অবৈধ জাল ধরপাকড় অভিযানে মাঠে ঝুঁকি নিতে হয়। রাজনৈতিক চাপ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপের মুখোমুখি হতে হয়।
বিসিএস মৎস্য ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা
⬇
সিনিয়র সহকারী পরিচালক
⬇
উপপরিচালক
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
১৮. বিসিএস বন ক্যাডার
বিসিএস বন ক্যাডার হলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একটি বিশেষায়িত ক্যাডার, যেখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মূলত বন, বন্যপ্রাণী, পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের টেশসই ব্যবস্থাপনায় কাজ করেন।
বিসিএস বন ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস বন ক্যাডারগণ নানারূপ সুবিধা ভোগ করে থাকে। যা নিম্নরুপ-
চাকরির নিরাপত্তা ও মর্যাদা: এই ক্যাডারগণ সরকারি চাকরির স্থায়িত্ব ও সামাজিক মর্যাদা লাভ করে থাকে।
আর্থিক সুবিধা: বিসিএস বন ক্যাডারগণ সরকারি বেতন স্কেল, ভাতা, উৎসব ভাতা, পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি সুবিধা লাভ করে থাকে।
বিদেশে প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা: পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ, উচ্চতর শিক্ষা ও কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারদের।
সমাজ ও রাষ্ট্রে অবদান: বনজ সম্পদ সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী রক্ষা, সামাজিক বনায়ন ও জলবায়ু মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারদের।
অন্যান্য সুবিধা: বিসিএস বন ক্যাডারগণ সরকারি বাসস্থান, চিকিৎসা সুবিধা, সরকারি গাড়ি, সন্তানদের শিক্ষা সুবিধা ইত্যাদি লাভ করে থাকেন।
বিসিএস বন ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস বন ক্যাডারগণ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে থাকে। নিচে সেগুলো তুলে ধরা হলো-
দুর্গম অঞ্চলে পোস্টিং: বিসিএস বন ক্যাডারগণ পাহাড়ি ও অরণ্য এলাকায় দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয়, যা শহরের জীবনযাত্রা থেকে অনেক দূরে ও চ্যালেঞ্জিং।
ঝুঁকিপূর্ণ কাজের পরিবেশ: এ ক্যাডারগণ বন দস্যু, চোরাশিকারি ও অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের হুমকি মোকাবিলা করে দায়িত্ব পালন করে যা তাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
সীমিত সুযোগ-সুবিধা: এই ক্যাডারদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং হয়ে থাকে। ফলে তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও যোগাযোগ সুবিধা সীমিত হয়।
কঠিন জীবনযাপন: বিসিএস বন ক্যাডার কর্মকর্তাগণদের দূর্গম অঞ্চলে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়, যা অনেক সময় মানসিক চাপ তৈরি করে।
কাজের চাপ ও চ্যালেঞ্জ: বিসিএস বন ক্যাডার কর্মকর্তাগণদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, বনজ সম্পদ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা জটিল ও চ্যালেঞ্জিং হয়ে থাকে।
বিসিএস বন ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
অ্যাসিস্ট্যান্ট কনজারভেটর অব ফরেস্টস (ACF)
⬇
ডিভিশনার ফরেস্ট অফিসার (DFO)
⬇
ডেপুটি কনজারভেটর অব ফরেস্টস (DCF)
⬇
কনজারভেটর অব ফরেস্টস (CF)
⬇
অ্যাডিশনাল চিফ কনজারভেটর অব ফরেস্টস (CCF)
১৯. বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার:
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
স্বাস্থ্য ক্যাডার মূলত চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জন্য। এই ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলো তুলো ধরা হলো-
নিরাপদ সরকারি চাকরি ও নিশ্চিত অবসরকালীন সুবিধা পাওয়া যায়।
একজন সরকারি চিকিৎসক হিসেবে সমাজে বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেন।
জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন, হাউস রেন্ট, মেডিকেল ভাতা, উৎসব ভাতা, শিক্ষা ভাতা ইত্যাদি পেয়ে থাকেন।
দেশে ও বিদেশে পোস্ট-গ্রাজুয়েট কোর্স করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। WHO, UNICEF, JICA সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় ট্রেনিংয়ের সুযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্য ক্যাডারের অভিজ্ঞতা থাকলে বিদেশে চিকিৎসক হিসেবে কাজের সুযোগ তৈরি হয়।
সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজে চাকরি করার সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারদের। প্রশাসনিক দায়িত্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে কাজের সুযোগ রয়েছে।
উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সরকারি কোয়ার্টার বা থাকার ব্যবস্থা থাকে। চিকিৎসা গবেষণার কাজ করার সুযোগ রয়েছে। মেডিকেল কলেজে শিক্ষক হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো-
এই ক্যাডারদের অনেক সময় প্রত্যন্ত গ্রামে/এলাকায় পোস্টিং দেওয়া হয়। পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়, যা সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে মানসিক অস্বস্তি/অশান্তিতে থাকতে হয়।
বাংলাদেশে চিকিৎসক সংখ্যা তুলনামূলক কম, কিন্তু রোগী সংখ্যা অনেক বেশি। তাই এই ক্যাডারদের দীর্ঘ সময় ধরে ডিউটি করতে হয়। বিশেষ করে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে।
অনেক হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি থাকে। সঠিক চিকিৎসা দিতে গিয়ে সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হয়।
সরকারি বেতন তুলনামূলক স্থিতিশীল হলেও প্রাইভেট সেক্টরের চিকিৎসকদের তুলনায় এই ক্যাডারদের বেতন কম। অতিরিক্ত ইনসেটিভ সব জায়গায় সমানভাবে মেলে না।
এই ক্যাডারদের সিনিয়রিটি ও শূন্য পদের কারণে পদোন্নতি দেরিতে হয়। অনেক সময় একই পদে দীর্ঘদিন থাকতে হয়।
এই ক্যাডারদের গ্রামাঞ্চল বা দুর্গম এলাকায় একা চিকিৎসা দিতে গিয়ে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। কখনও কখনও রোগীর স্বজনদের অসন্তোষ বা হামলার ঘটনাও ঘটে।
এই ক্যাডারদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের নানা প্রশাসনিক চাপ থাকে। অনেক সময় চিকিৎসা সেবার চাইতে প্রশাসনিক কাজে বেশি সময় দিতে হয়।
এই ক্যাডারদের রাতের ডিউটি, অনিয়মিত কর্মঘন্টা ও অতিরিক্ত চাপ ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যাহত করে। পরিবারকে সময় দেওয়া যায় না।
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী সার্জন/মেডিকেল অফিসার
⬇
সিনিয়র মেডিকেল অফিসার
⬇
সিনিয়র কনসালট্যান্ট
⬇
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
⬇
রেজিস্ট্রার
⬇
সিভিল সার্জন
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
২০. বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডার
বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডার হলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এর অধীনে পরিচালিত একটি ক্যাডার সার্ভিস। এই ক্যাডারের কর্মকর্তা মূলত পশুচিকিৎসা, পশুসম্পদ উন্নয়ন, ভ্যাকসিন উৎপাদন, কৃত্রিম প্রজনন, প্রাণিজ পণ্য উৎপাদন ও গবেষণামূলক কাজে নিয়োজিত থাকেন।
বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস বন ক্যাডারগণ নানারূপ সুবিধা ভোগ করে থাকে। যা নিম্নরূপ-
সরাসরি জনসেবা প্রদানের সুযোগ: পশুচিকিৎসা, ভ্যাকসিন, কৃত্রিম প্রজনন, পশুরোগ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির মাধ্যমে কৃষক ও গ্রমীণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি জনসেবামূলক কাজের সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারগণদের।
কর্মক্ষেত্রের বৈচিত্র্য: এই ক্যাডারগণ গবেষণা, প্রশিক্ষণ, পশু, হাসপাতল, জেলা-উপজেলা, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে কাজের সুযোগ পান। যা এই ক্যাডারদের অন্যতম সুবিধা।
প্রমোশন ও পদোন্নতির সুযোগ: বিসিএস পশু সম্পদ ক্যাডারগণ নিয়মিত পদোন্নতি হয়ে পরিচালক, মহাপরিচালক পর্যন্ত উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ: এই ক্যাডার কর্মকর্তাগণ দেশি-বিদেশি ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষার সুবিধা লাভ করে থাকেন।
সরকারি সুবিধা: এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ সরকারি চাকরির সব সুযোগ যেমন: বেতন কাঠামো , বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, পেনশন, চিকিৎসা সুবিধা, ছুটি ইত্যাদি লাভ করে থাকেন।
বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারদের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি নানারূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলো ধরা হলো-
গ্রামীণ এলাকায় পোস্টিং: বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারদের গ্রামীণ এলাকায় পোস্টিং হয়ে থাকে। ফলে গ্রাম্য পরিবেশে জীবন যাপন অধিকাংশ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত কর্মচাপ: এই কর্মকর্তাগণদের অনেক সময় বিশাল এলাকার দায়িত্বে থাকতে হয়। ফলে কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে।
সীমিত অবকাঠামো সুবিধা: প্রত্যন্ত এলাকায় পোস্টিং হওয়ায় অনেক সময় এই ক্যাডারগণ পর্যাপ্ত হাসপাতল সুবিধা, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির অভাব থাকে। যা এই ক্যাডারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
আর্থিক সীমাবদ্ধতা: এই ক্যাডারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের তুলনায় সরকারি চাকরিতে আয় সীমিত হওয়ায় অনেকে এই পেশা ছেড়ে ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালনা করে।
ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ: এই ক্যাডারের কর্মকর্তাগণদের বিভিন্ন ধরনের পশুরোগ, মহামারী ইত্যাদি সেবাপ্রদানে সরাসরি মাঠ পর্যায়ে কাজ করা লাগে। যা এই ক্যাডারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
বিসিএস পশুসম্পদ ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
⬇
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
⬇
উপ-পরিচালক
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
২১. বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডার
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডার মূলত পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন, ড্রেনেজ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন কাজ করে। এই ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধাগুলো নিম্নে তুলো ধরা হলো-
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডার হিসেবে স্থায়ী ও নিরাপদ চাকরির নিশ্চয়তা রয়েছে। জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী ভালো বেতন, সাথে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকে।
এই ক্যাডারে গ্রামীণ ও শহরে জনগণের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন উন্নয়নের মাধ্যমে সরাসরি জনস্বাস্থ্যে অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারে সরকারি খরচে দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারে পৌরসভা, উপজেলা, জেলা, সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারে সরকারি আবাসন, গাড়ি সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা, অবসর সুবিধা, পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটির সুযোগ থাকে।
এই ক্যাডারে প্রকল্পভিত্তিক কাজ, উন্নয়ন প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক সংস্থার UNICEF, World Bank সহযোগিতায় কাজের সুযোগ রয়েছে।
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো-
অধিকাংশ পদে উপজেলা বা গ্রামীণ এলাকায় পোস্টিং হয়; শহরে পদসংখ্যা তুলনামূলক কম।
সীমিত জনবল নিয়ে বিশাল এলাকা কাভার করতে হয়, ফলে কাজের চাপ বেশি থাকে।
অফিসের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকায় নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন ও তদারকি করতে হয়।
দুর্গম এলাকা, বন্যা বা খরাপ্রবণ অঞ্চলে কাজের সময় শারীরিক কষ্ট বেশি হয়।
অনেক সময় পানি সরবারাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজনৈতিক বা স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপ থাকে।
অনেক কাজ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট নির্ভর: প্রকল্প শেষ হলে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। অন্যান্য টেকনিক্যাল ক্যাডারের মতোই পদোন্নতি ধীরে হয়। বিশেষ করে উচ্চপদে সীমিত পদ থাকার কারণে।
অবকাঠামোগত কাজ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সঠিকভাবে কাজ না করলে জবাবদিহি ও অভিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সব এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী বাজেট পাওয়া যায় না, ফলে কাজ বাস্তবায়নে সমস্যা হয়।
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী প্রকৌশলী
⬇
উপবিভাগীয় প্রকৌশলী
⬇
নির্বাহী প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী/তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী (DPHE)
২২. বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডার
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারগণমূলত সরকারি ভবন ও অবকাঠামো উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, নকশা ও নির্মাণ সম্পর্কিত কাজ পরিচালনা করে। এটি মূলত গণপূর্ত অধিদপ্তর এর আওতায় পরিচালিত হয়।
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের সুবিধাসমূহ:
গণপূর্ত ক্যাডারগণ অন্যান্য বিসিএস ক্যাডারদের ন্যায় নানাবিধ সুবিধাভোগ করে থাকেন, নিম্নে এই ক্যাডারদের সুবিধা সমূহ তুলে ধরা হলো-
প্রশাসনিক মর্যাদা ও সম্মান: গণপূর্ত ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরাসরি বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো উন্নয়ন, ভবন নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে যুক্ত থাকেন। যা তাদের সম্মান ও মর্যাদাকে অনেক বৃদ্ধি করে।
বিস্তৃত কর্মক্ষেত্র: সরকারি অফিস ভবন, আবাসিক প্রকল্প, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেতু ইত্যাদি সংস্কার ও নির্মাণে বিস্তৃত ভূমিকা পালন করে থাকে এই ক্যাডারগণ।
প্রমোশনের সুযোগ: নিয়মিত পদোন্নতির মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান প্রকৌশলী সচিবালয়ের উচ্চপদে পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে এই ক্যাডারদের।
পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি: গণপূর্ত ক্যাডারগণ প্রকৌশলবিদ্যার সরাসরি প্রয়োগ ঘটাতে পারে, ফলে তাদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
অতিরিক্ত আর্থিক সুযোগ: গণপূর্ত ক্যাডারগণ মূল বেতন ছাড়াও সরকারি প্রকল্পভিত্তিক ভাতা, টিএ/ডিএ ইত্যাদি লাভ করে থাকে।
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের অসুবিধা:
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারগণ সুবিধার পাশাপাশি নানরূপ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে থাকে। নিম্নে গণপূর্ত ক্যাডারদের অসুবিধাসমূহ তুলে ধরা হলো-
অতিরিক্ত দায়িত্ব ও কাজের চাপ: গণপূর্ত ক্যাডারগণ সরকারি বড় বড় প্রকল্প সরাসরি পরিচালনা ও তদরাকির দায়িত্বে থাকেন, ফলে কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে।
পদোন্নতি ধীরগতি: গণপূর্ত ক্যাডারগণের অনেক সময় সিনিয়রটির কারণে প্রমোশন বিলম্ব হয়ে থাকে।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ: এই ক্যাডারদের কাজের ক্ষেত্রে অনেক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপ সামলাতে হয় যা এই ক্যাডারদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
প্রকল্প ভিত্তিক জটিলতা: এই ক্যাডারদের অনেক সময় বাজেট সংকট, টেন্ডার জটিলতা বা কাজের গুণগত মান নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।
প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা: এই ক্যাডারদের আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগে অনেক সময় সরকারি ব্যবস্থার ধীরগতি কাজের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী প্রকৌশলী
⬇
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
⬇
বিভাগীয় প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
⬇
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী
২৩. বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডার
বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডার বিসিএস এর একটি বিশেষ ক্যাডার, যেখানে প্রকৌশলীরা বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্প, অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পান।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে সম্মান, সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী আকর্ষনীয় বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা লাভ করে।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী আকর্ষণীয় বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা, অবসরের পর পেনশন, গ্রাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি পেয়ে থাকে।
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ট্রেনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা। ফ্রি বা ডিসকাউন্ট টিকেট।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ রেললইন, সেতু, সিগন্যালিং, টেলিযোগাযোগ, রোলিং স্টক (ইঞ্জিন, কোচ) মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা ধরণের প্রকৌশল কার্যক্রম কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ বড় ধরণের উন্নয়ন প্রকল্প, ডুয়েল গেজ রেলপথ আধুনিক সিগন্যালিং সিস্টেম বাস্তবায়নে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ উন্নত দেশ সমূহে প্রশিক্ষণ বা উচ্চতর ডিগ্রির সুযোগ থাকে।
বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারের অসুবিধা:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
BCS রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারগণ ট্রেন চলাচলের নিরাপত্তা, সিগন্যালিং, লাইন রক্ষণাবেক্ষণসহ ঝুঁকিপূর্ণ কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিস্তৃত হওয়ায় নিয়মিত বদলি হতে হয়। পরিবার থেকে দূরে কাজ করার পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পুরনো লাইন, কোচ ও ইঞ্জিনের কারণে অনেক সময় কাজের পরিবেশ কষ্টকর হয়।
উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষনে বাজেট সংকটের কারণে প্রকৌশলীদের ভোগান্তি হয়।
সব জায়গায় কোয়ার্টার বা ভালো আবাসন সুবিধা মেলে না। রেল দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে প্রকৌশলীরা সরাসরি দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়েন।
কাগজপত্রের জটিলতা ও প্রশাসনিক ধীরগতির কারণে কাজে হতাশা তৈরী হতে পারে।
গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করতে হয়, শহরকেন্দ্রিক জীবনযাপন পছন্দ করলে মানিয়ে নিতে কষ্ট হতে পারে।
বিসিএস রেলওয়ে প্রকৌশল ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী প্রকৌশলী
⬇
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত মহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
২৪. বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডার
বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারগণ মূলত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বা সাধারণ প্রকৌশলী হিসেবে দাযিত্বগ্রহণ করে থাকে। তারা দেশের মহাসড়ক, সেতু, কালভার্ট, অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা কাজ করে থাকেন।
বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারের সুবিধাসমূহ:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় এই ক্যাডারগণ নানারূপ সুযোগ সুবিধা লাভ করে থাকেন। নিম্নে এই ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা তুলে ধরা হলো-
মর্যাদাপূর্ণ পেশা: প্রকৌশলীদের জন্য এই ক্যাডার অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ পেশা। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরাসরি যুক্ত থাকায় নিজের সম্মান বৃদ্ধির সুযোগ থাকে এই ক্যাডারদের।
চাকরির নিরাপত্তা ও আর্থিক সুবিধা: এই ক্যাডারগণ চাকরির নিরাপত্তা, সরকারি স্কেলে বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, পেনশন, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি সুবিধা লাভ করে থাকেন।
প্রকল্প উন্নয়নমূলক সুযোগ: সেতু, ফ্লাইওভার, মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কসহ বড় বড় প্রকল্পে কাজ করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা ও কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র্য শিক্ষার সুযোগ থাকে এই ক্যাডারদের।
বিদেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ: এই ক্যাডারগণ বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থায়নে প্রকল্প থাকায় বিদেশে ট্রেনিং ও উচ্চতর ডিগ্রির সুযোগ লাভ করে থাকেন।
পদোন্নতি ও প্রশাসনিক দায়িত্ব: বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারগণ পদোন্নতির মাধ্যমে চিপ ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত উন্নতির সুযোগ থাকে। তাছাড়া উচু পদে গেলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ থাকে।
বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারের অসুবিধাসমূহ:
সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারদের নানারূপ চ্যালেঞ্জও রয়েছে। নিম্নে এই ক্যাডারের অসুবিধাসমুহ তুলে ধরা হলো-
কাজের চাপ বেশি: বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারে তুলনামূলক কাজের চাপ বেশি। মাঠ পর্যায়ে সবসময় নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি করতে হয়। মূলত প্রকল্পের সময়সীমা ও মান বজায় রাখতে এই চাপ সৃষ্টি হয়ে থাকে।
পোস্টিং সমস্যা: এই ক্যাডারদের অনেকসময় দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং হতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়।
রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ: এই ক্যাডারদের টেন্ডার, কন্ট্রাক্টর, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপের মুখে কাজ করতে হয়।
প্রকল্পভিত্তিক দূর্নীতির ঝুঁকি: প্রকল্প ও টেন্ডার কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে এই ক্যাডারদের। আবার সততার সহিত কাজ করলে নান চাপের মুখে পড়তে হয় এই ক্যাডারদের।
পদোন্নতির ধীরগতি: বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারদের অনেক ক্ষেত্রে পদোন্নতি ধীর গতি হয়ে থাকে। উচ্চ পদস্ত রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশমত প্রকল্প সুবিধা না দিলে রাজনৈতিক নেতারা তাদের পদোন্নতি আটকে দেয় যা এই ক্যাডারদের অন্যতম অসুবিধা।
বিসিএস সড়ক ও জনপদ ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী প্রকৌশলী
⬇
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
⬇
কার্যনির্বাহী প্রকৌশলী
⬇
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী
⬇
প্রধান প্রকৌশলী
২৫. বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডার
বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারের সুযোগ-সুবিধা:
বিসিএস অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় পরিসংখ্যান ক্যাডারগণ নানারূপ সুযোগ সুবিধা লাভ করে থাকেন। নিম্নে এই ক্যাডারের সুযোগ সুবিধা তুলে ধরা হলো-
বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারগণ জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি প্রণয়ন, জরিপ, জনগণনা ইত্যাদির সাথে সরাসরি যুক্ত থেকে জনগণের প্রশংসা অর্জনের সুযোগ পান।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান সেল ইত্যাদিতে কাজের সুযোগ থাকে।
এই ক্যাডারে নিয়মিত পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী পরিচালক থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত উত্তরণের সুযোগ রয়েছে।
এই ক্যাডারে দেশে-বিদেশে পরিসংখ্যান ও ডাটা অ্যানালাইসিস বিষয়ে ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকে।
এই ক্যাডারে সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে সামাজিক মর্যাদা, সুবিধা এবং নিরাপত্তা লাভের সুযোগ রয়েছে।
জাতীয় বাজেট, উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি মূল্যায়নে ডাটা সাপোর্ট দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা যায়।
সরকারি বেতন কাঠামো, গাড়ি, বাসস্থান, চিকিৎসা, ছুটি, পেনশন ইত্যাদি নিয়মিত সুবিধা পাওয়া যায়।
বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারের অসুবিধা:
সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারদের নানারূপ চ্যালেঞ্জও রয়েছে। নিম্নে এই ক্যাডারের অসুবিধাসমুহ তুলে ধরা হলো-
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক হওয়ায় পদায়নের বৈচিত্র্য তুলনামূলক কম।
জনগণনা, জরিপ ইত্যাদির সময় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়।
অন্যান্য জনপ্রশাসনকেন্দ্রিক ক্যাডারের তুলনায় পদোন্নতি ধীর হতে পারে।
অনেকেই পরিসংখ্যান ক্যাডার সম্পর্ক তেমন জানেনা, ফলে সামাজিক মর্যাদা তুলনামূলক কম মনে হয়।
মূলত টেকনিক্যাল কাজ ডাটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, রিপোর্ট প্রণয়ন হওয়ায় প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক নেটওয়ার্কিং কম হয়।
সরকারি চাকরির নির্দিষ্ট স্কেল ছাড়া বিশেষ কোনো আর্থিক সুযোগ সাধারণত থাকে না।
বিসিএস পরিসংখ্যান ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
সহকারী পরিচালক
⬇
উপপরিচালক
⬇
সহকারী প্রধান
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক
⬇
পরিচালক
⬇
পরিচালক জেনারেল
২৬. বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডার
বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডার মূলত পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (Tsc) টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ইত্যাদিতে শিক্ষকতার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। অর্থাৎ এটি মূলত শিক্ষকতা নির্ভর ক্যাডার।
বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারের সুবিধাসমূহ:
অন্যান্য ক্যাডারের ন্যায় বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারগণ নানারূপ সুযোগ সুবিধা লাভ করে থাকেন। নিম্নে এগুলো তুলে ধরা হলো।
শিক্ষকতার মর্যাদা: বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারগণ সরকারি শিক্ষক হিসেবে সমাজে সম্মান ও মর্যাদা পেয়ে থাকেন। যা এই ক্যাডারের অন্যতম সুবিধা।
স্থিতিশীল চাকরি: এই ক্যাডারগণ সরকারি সকল সুবিধার পাশাপাশি কাজের স্থিতিশীলতা লাভ করে থাকেন। অর্থাৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মনোরম পরিবেশে কাজের সুযোগ থাকে।
কাজের পরিবেশ: ক্লাস নেওয়া, শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক জ্ঞান প্রদান ও নতুন নতুন পরিবেশের সাথে শিক্ষা অর্জনের সুযোগ থাকে।
পদোন্নতির সুযোগ: বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারগণ সময়মতো পদোন্নতির সুবিধা পেয়ে থাকেন। অধ্যাপক > প্রিন্সিপাল > সুপারিন্টেনডেন্ট পর্যন্ত পদোন্নতির সুযোগ থাকে।
প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ: বিসিএস কারিগরি শিক্ষকরা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ লাভ করে থাকেন, যা এই ক্যাডারের অন্যতম সুবিধা।
বিসিএস কারিগরি ক্যাডারের অসুবিধাসমূহ:
সুবিধার পাশাপাশি বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারদের নানরূপ অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
পদোন্নতি ধীরগতি: প্রশাসন বা শিক্ষা ক্যাডারের তুলনায় বিসিএস কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারদের পদোন্নতির সুযোগ অনেক কম থাকে। যা এই ক্যাডারের অন্যতম অসুবিধা।
পোস্টিং সীমাবদ্ধতা: মূলত পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ দেশে সীমাবদ্ধ হওয়ায় এই ক্যাডারগণ চাহিদা অনুযায়ী পোস্টিং পান না।
অতিরিক্ত কাজের চাপ: শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, রিপোর্ট প্রস্তুত ইত্যাদি কাজ করতে হয় এই ক্যাডারদের।
আর্থিক সীমাবদ্ধতা: এই ক্যাডারদের বেতন ও ভাতা সরকারি নিয়মে হলেও অতিরিক্ত কোনো সুযোগ যেমন: প্রশাসনিক ভাতা, প্রকল্পভিত্তিক ভাতা সাধারণত থাকে না। পাশাপাশি প্রাথমিক পর্যায়ে বেতন তুলনামূলক কম ধরা হয়। যা এই ক্যাডারের দারুন অসুবিধার সৃষ্টি করে।
ব্যবহারিক উপকরণ স্বল্পতা: কারিগরি শিক্ষার্থীদের অনেকের ব্যাকগ্রাউন্ড দুর্বল থাকে, ফলে ক্লাসে ব্যবহারিক ও ল্যাবভিত্তিক যথেষ্ট উপকরণ ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার দরুণ শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষাদানে ব্যাহত হন।
বিসিএস কারিগরি ক্যাডারের পদসোপান/পদক্রম:
প্রভাষক
⬇
সহকারী অধ্যাপক
⬇
অধ্যাপক
⬇
প্রিন্সিপাল/উপাধ্যক্ষ
⬇
অধ্যক্ষ
⬇
অতিরিক্ত পরিচালক/পরিচালক
⬇
উপমহাপরিচালক
⬇
মহাপরিচালক
বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সংক্রান্ত সচরাচর জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নের উত্তর:
প্রশ্ন: বিসিএস ক্যাডার কয়টি?
উত্তর: বিসিএস ক্যাডার এর সংখ্যা সর্বমোট ২৬টি।
প্রশ্ন: সাধারণ ক্যাডার কী?
উত্তর: বিসিএস এর যে ক্যাডার গণ মূলত প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, কূটনীতি ইত্যাদি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে কাজ করে তাদের সাধারণ ক্যাডার বলা হয়। যেকোনো বিষয়ে অধ্যয়ন করা প্রার্থীগণ বিসিএস সাধারণ ক্যাডার পদে আবেদন করতে পারেন।
প্রশ্ন: প্রফেশনাল ক্যাডার / টেকনিক্যাল কী?
উত্তর: বিসিএস এর অন্তর্ভুক্ত যেসকল ক্যাডার পদে আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রির প্রয়োজন হয় সে সকল ক্যাডার পদ গুলোকে প্রফেশনাল ক্যাডার / টেকনিক্যাল ক্যাডার বলে। এই ধরণের পদগুলো মূলত শিক্ষা / স্বাস্থ্য / প্রকৌশল কেন্দ্রিক হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: কোন ক্যাডার সবচেয়ে ভালো?
উত্তর: বিসিএস এর কোন ক্যাডার আপনার জন্য ভালো হবে সেটির পুরোটাই নির্ভর করে প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পছন্দ, আর্থিক সচ্ছলতা, সামাজিক পদমর্যাদা, পদায়ন ও বৈধভাবে বাড়তি আয়ের সুযোগের উপর। তবে এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, শুল্ক ও সচ্ছলতা ক্যাডার পছন্দের সচ্ছলতা থাকে।
প্রশ্ন: কোন কোন বিষয়ে প্রশাসন ক্যাডার আছে?
উত্তর: বিসিএস এর ২৬টি ক্যাডারের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার টি মূলত সাধারণ ক্যাডারের অন্তর্ভুক্ত। এই ক্যাডারে আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট কোন বিষয় থেকে স্নাতক / সমমানের ডিগ্রি অর্জনের কোন প্রয়োজন নেই। বিসিএস পরীক্ষার জন্য আবেদনের যোগ্য যেকোনো প্রার্থীই প্রশাসন ক্যাডার চয়েজ করে আবেদন করতে পারবেন।
Comments