৪৯তম
বিশেষ বিসিএস প্রস্তুতি কীভাবে শুরু করবেন?
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে ৬৮৩ টি (সরকারি
সাধারণ কলেজ ৬৫৩ ও সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজসমূহে ৩০ টি) শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে
গত ২১ জুলাই ৪৯তম বিশেষ বিসিএস (শিক্ষা) এর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ
সরকারি কর্ম কমিশন। যদিও বাংলাদেশে ৩ হাজার ৫৮৫ টি প্রভাষক শূন্য পদ রয়েছে। বিশেষ এ
বিসিএস পদে নিয়োগের লক্ষ্যে ২২ জুলাই ২০২৫ থেকে ২২ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা
নির্ধারণ করেছে-PSC। দেশের হাজারো তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং
এই পরীক্ষায় সফলতা অর্জনের স্বপ্ন বয়ে বেড়ায় শতশত দিনব্যাপী। কিন্তু এই প্রতিযোগীতামূলক
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াটা কি এতই সহজ?
৪৯তম
বিসিএস প্রস্তুতি
আপনি জানেন কী? জেনারেল বিসিএস এ প্রিলি
পরীক্ষার নম্বর যোগ হয় না কিন্তু স্পেশাল বিসিএস এ প্রিলি ও ভাইভার নম্বর যোগ করেই
ক্যাডার নির্ধারণ হয়। তাই ৪৯তম স্পেশাল বিসিএস প্রার্থীরা প্রিলিতে যত বেশি নম্বর তুলতে
পারবেন ক্যাডার হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। BCS-ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন তাদেরই পূরণ
হয় যারা পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস ও প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ, রুটিন মাফিক বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা,
গুরুত্বপূর্ণ খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ, প্রত্যেকটি বিষয়ে নিজের দুর্বলতা খুজে বের করে
সমাধান করে তাদেরেই BCS-ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়। আপনার প্রস্তুতি এখানে-
৪৯তম
বিসিএস সিলেবাস বিশ্লেষণ
বিসিএস এ উত্তীর্ণ
হতে হলে প্রথমেই সিলেবাস বিশ্লেষণ করা জরুরি। ৪৯ তম বিসিএস (বিশেষ) এর পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস
পেতে এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন। এরপর ধীরে ধীরে সকল বিগত
BCS-প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে বুঝার চেষ্টা করুন। কোন কোন টপিক থেকে BCS-এ সবথেকে বেশি প্রশ্ন
করা হয় সেই সমস্ত টপিকের উপর অধিক গুরুত্ব দিন। অভিজ্ঞ মেন্টরদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার
আলোকে ৪৯তম বিসিএস এ সফল হতে দেশের শীর্ষ প্লাটফর্ম বিদ্যাবাড়ির চলমান কোর্সে যুক্ত
হতে পারেন।
৪৯তম
বিসিএস এর মানবণ্টন
৪৯তম বিশেষ বিসিএস এ মোট ৩০০ নম্বারের
পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষাতে ২০০ টি প্রশ্ন থাকবে। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট ক্যাডার
এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পদের জন্য প্রাসঙ্গিক বিষয় প্রশ্ন ১০০ টি এবং ১০০ টি প্রশ্ন
থাকবে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক
যুক্তির উপর। আর ১০০ নম্বর থাকবে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায়। উল্লেখ্য যে, প্রার্থী
প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন, তবে ভুল উত্তর দিলে প্রতিটি ভুল উত্তরের
জন্য মোট নম্বর হতে ০.৫০ (শূন্য দশমিক পাঁচ শূন্য) নম্বর কাটা যাবে।
i)
লিখিত পরীক্ষা (MCQ Type) : ২০০
ii) মৌখিক পরীক্ষা : ১০০
মোট নম্বর : ৩০০
MCQ Type- এর বিষয়সমূহ, নম্বর বন্টণ, সময় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি নিম্নরূপ:
ক্রমিক
|
বিষয়
|
নম্বর বণ্টন
|
সময়
|
১
|
বাংলা
|
২০
|
২ ঘণ্টা
|
২
|
ইংরেজি
|
২০
|
৩
|
বাংলাদেশে বিষয়াবলি
|
২০
|
৪
|
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
|
২০
|
৫
|
মানসিক দক্ষতা
|
১০
|
৬
|
গাণিতিক যুক্তি
|
১০
|
৭
|
সংশ্লিষ্ট ক্যাডার এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পদের জন্য প্রাসঙ্গিক
বিষয়
|
১০০
|
|
সর্বমোট=
|
২০০
|
৪৯তম বিসিএস (শিক্ষা)
এর বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদসংখ্যা
যদিও সারাদেশে ৩ হাজার ৫৮৫ টি প্রভাষক
শূন্যপদ রয়েছে। তবে সরকারি সাধারণ কলেজে ৬৫৩ টি এবং সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ সমূহে
৩০টি সর্বমোট ৬৮৩ টি শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস
কমিশন। নিচে বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদ সমূহ ও পদসংখ্যা তুলে ধরা হলো-
ক্রমিক সংখ্যা
|
বিষয় কোড
|
বিষয়
|
শূন্যপদ সংখ্যা
|
০১
|
১১১
|
বাংলা
|
৬৪
|
০২
|
৩৪১
|
রাষ্ট্রবিজ্ঞান
|
৫৯
|
০৩
|
১২১
|
ইংরেজি
|
৫৪
|
০৪
|
৩৩১
|
অর্থনীতি
|
৪০
|
০৫
|
১৯১
|
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি
|
৩২
|
০৬
|
৭৩১
|
ম্যানেজমেন্ট
|
৩২
|
০৭
|
২১১
|
দর্শন
|
৩০
|
০৮
|
১৮১
|
ইতিহাস
|
৩০
|
০৯
|
৫৩১
|
রসায়ন
|
৩০
|
|
৫৪১
|
ফলিত রসায়ন
|
|
|
৬০১
|
প্রাণ রসায়ন
|
|
১০
|
৫৫১
|
গণিত
|
৩২
|
|
৫৬১
|
ফলিত গণিত
|
|
১১
|
৩১১
|
ভূগোল
|
১৯
|
১২
|
৭০১
|
হিসাববিজ্ঞান
|
৩০
|
১৩
|
৫১১
|
পদার্থবিদ্যা
|
২৫
|
১৪
|
৯৭১
|
কম্পিউটার সায়েন্স
|
২৫
|
|
২৮১
|
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
|
|
|
৮৯২
|
ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং
|
|
১৫
|
৩৬১
|
সমাজকল্যাণ
|
২৫
|
১৬
|
৫৮১
|
উদ্ভিদবিদ্যা
|
২৪
|
১৭
|
৭১১
|
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং
|
২০
|
১৮
|
৫৯১
|
প্রাণিবিদ্যা
|
১৫
|
১৯
|
২০১
|
ইসলাম শিক্ষা
|
১৫
|
২০
|
৩৫১
|
সমাজবিজ্ঞান
|
১৫
|
২১
|
৯৮১
|
পরিসংখ্যান
|
১৫
|
২২
|
৭২১
|
মার্কেটিং
|
১০
|
২৩
|
১৭১
|
মনোবিজ্ঞান
|
১০
|
২৪
|
৩৯১
|
গার্হস্থ অর্থনীতি
|
০৮
|
২৫
|
২২১
|
শিক্ষা
|
০৬
|
২৬
|
৮০১
|
কৃষি বিজ্ঞান
|
০৫
|
২৭
|
১৫১
|
সংস্কৃতি
|
০৫
|
২৮
|
|
বিজ্ঞান
|
০৩
|
২৯
|
|
ইসলামিক আদর্শ
|
০৩
|
৩০
|
৬৬১
|
খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান
|
০২
|
|
|
সর্বমোট শূন্যপদ
|
৬৮৩
|
৪৯তম
BCS এ সফল হওয়ার কৌশল
আপনি জানেন কী? ৪৯তম বিশেষ BCS পরীক্ষা
অক্টোবরের ১ম সপ্তাহে হতে পারে (PSC)। তাই আর দেরি না করে আপনার প্রস্তুতি শুরু করুন
আজ থেকেই। আর প্রতিটি পরীক্ষার্থীর বিসিএস (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) প্রস্তুতি শুরু
করার জন্য একটি সুপরিকল্পিত ও ধৈর্য্যশীল পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। তবে প্রস্তুতির
শুরুতেই সর্বপ্রথম কাজটি হচ্ছে বিগত বিসিএস পরীক্ষা এবং এর সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে
সঠিক ধারণা অর্জন করা। ৪৯তম বিসিএস এর যাবতীয় তথ্য পেতে এখানে যুক্ত হতে পারেন।
এছাড়াও নিম্নোক্ত নির্দেশনাসমূহ আপনার স্বপ্ন পূরণের সহায়ক হতে পারে।
১. বিশেষ বিসিএস এ সফল হতে হলে সামনের ২টি মাস পুরোপরি কাজে
লাগাতে হবে।
২. নিয়মিত
পড়াশোনার রুটিন তৈরি করুন।
৩. বাংলা,
ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি
প্রত্যেকটি বিষয়ের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করুন।
৪. বিগত বিসিএস
এর প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যা সহ পড়ে ফেলুন।
৫. ৭ম-১০ম
শ্রেণীর বই থেকে পিএসসির সিলেবাসে যে টপিকগুলো আছে সেগুলো পড়ুন।
৬. সাধারণ
বিষয়গুলো আরও গুছিয়ে পড়ার জন্য বাজারে বহুল প্রচলিত বিদ্যাবাড়ির “বিসিএস ডাইজেস্ট প্লাস”
বইটি অনুসরণ করতে পারেন।
৭. আপনার
ঐচ্ছিক বিষয়ের উপর সমান গুরুত্ব দিন।
৮. নিজের
ঐচ্ছিক বিষয়ের সিলেবাসটি ভালোমত দেখে নিন।
৯. ঐচ্ছিক
বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ভালোমত আয়ত্ত করুন।
১০. কোন টপিকগুলো
পড়তে হবে তা জানার পাশাপাশি কোন টপিকগুলো বাদ দিতে হবে এই সম্পর্কে জানুন।
১১. নিয়মিত
পত্রিকা থেকে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে ধারণা নিন।
১২. মডেল
টেস্ট দেওয়ার মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতি যাচাই করুন।
১৩. যদি বুঝতে
না পারেন যে কিভাবে পড়তে হবে বা কোন টপিকগুলো পড়তে হবে তাহলে বিদ্যাবাড়ির বিশেষ বিসিএস
এর বিষয়ভিত্তিক কোর্সে ভর্তি হতে পারেন।
১৪. ঘরে বসে
থেকেই স্বল্প খরচে বিদ্যাবাড়ির কোর্স করার মাধ্যমে আপনার প্রস্তুতিকে আরও মজবুত করে তুলুন।
শেষকথা: বিসিএস মূলত একটি দীর্ঘদিনের ধৈর্য্য,
মেধা, পরিশ্রম ও কৌশলের ফল। সুতরাং আপনার সুপরিকল্পিত প্রস্তুতি আপনাকে অবশ্যই সফলতা
এনে দিবে। তাই নিজের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী থাকুন। নিয়মিত পড়াশোনা করুন সফল আপনিই হবেন
ইনশাআল্লাহ।
Comments